গবেষণা: আবাসন খাতে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় এখন
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছর কঠিন সময় পার করেছে দেশের আবাসন খাত। এতে ছোট ছোট অনেক প্রতিষ্ঠান টিকতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি খানিক অনুকুল মনে হচ্ছে এবং টিকে থাকা আবাসন কোম্পানিগুলো সুদিনের মুখ দেখতে শুরু করেছে।
বেশকিছু আবাসন কোম্পানি গ্রাহককে সেবা দেওয়ার মনমানসিকতা নিয়ে কাজ করছে। মন্দার কারণে অনেক কোম্পানি ফ্ল্যাট বিক্রি করতে না পারায় এখন ঢাকায় এলাকাভেদে ফ্ল্যাটের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে।
দেশের আবাসন খাত নিয়ে অনলাইন ক্লাসিফায়েড প্রতিষ্ঠান লামুডির এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
রাজধানীর সেভেনহিল রেষ্টুরেন্টে প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়ে ‘জার্নালিস্টস মিট-আপ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বক্তব্য দেন লামুডি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যানি মারিয়া হারম্যানস। তিনি জানান, ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ গবেষণা করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ঢাকায় গত চার বছরে এলাকাভেদে ফ্ল্যাটের দাম ১০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে। বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনায় বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আগের চেয়ে কম সুদে আবাসন ঋণ দিচ্ছে। এ ছাড়া ক্রেতার আস্থা বাড়াতে দেশের আবাসন কোম্পানিগুলো এখন মানসম্পন্ন ফ্ল্যাট তৈরির প্রকল্প হাতে নিচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এখন আবাসন ঋণের সুদের পরিমাণ বেশ কম। আবাসনের জন্য ঋণ পেতে সরকারও বেশ কিছু সহায়ক নীতিমালা নিয়েছে। এ জন্য ফ্ল্যাট কেনার উপযুক্ত সময় এখনই।
ঢাকায় ফ্ল্যাট বা প্লট কেনার জন্য ক্রেতার চাহিদার শীর্ষে আছে উত্তরা এলাকা। এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, সুযোগ-সুবিধা অনুসারে ক্রেতা যে দামে ফ্ল্যাট কিনতে চান সেগুলোর বেশির ভাগই উত্তরায় অবস্থিত। এ এলাকায় প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম ৬ হাজার ৯০০ টাকা। বনানী বা ধানমন্ডিতে বর্গফুটপ্রতি ফ্ল্যাটের দাম ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। দামের তুলনায় উত্তরায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধার মান বেশ ভালো। এসব কারণেই ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে আছে উত্তরা এলাকা। তবে ধানমন্ডি, বনানী ও বসুন্ধরার মতো এলাকায় গত এক বছরে সম্পত্তির দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে।
লামুডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যানি মারিয়া হারম্যানস বলেন, ‘বাংলাদেশে প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার উপযুক্ত সময় এখনই। তবে ঢাকার মতো শহরে উপযুক্ত সম্পত্তি কোনটি সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। লামুডির মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেস ক্রেতার চাহিদা ও আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী বাজারে সবচেয়ে উপযুক্ত সম্পত্তি খুঁজে পেতে ক্রেতাকে সহযোগিতা করে।’
অনুষ্ঠানে বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং ফর টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়ার (বিটিআই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফ আর খান বলেন, ‘সবদিক থেকে দেশের পরিস্থিতি এখন সুষ্ঠু এবং বিনিয়োগবান্ধব। আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুনভাবে ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে পারছে।’ তিনি পুরোনো ফ্ল্যাট বিক্রিতে নিবন্ধন ফি কমানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন। একটি উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ি কিনলে নতুনের তুলনায় কম টাকায় নিবন্ধন করা যায়। কিন্তু বাড়ি নতুন কিংবা পুরনো যেভাবেই কেনা হোক না কেন, একই রকম নিবন্ধন ফি লাগে। এটি কমানো উচিত।’
প্রসঙ্গত, প্লট বা ফ্ল্যাট কেনাবেচায় ক্রেতা ও আবাসন কোম্পানির সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে লামুডি। এ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার ৩২টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১৩ সালের ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে অনলাইনে ফ্ল্যাট, প্লট ও সম্পত্তি কেনাবেচার পাশাপাশি অনলাইনে বাসা-বাড়ি ভাড়ার নেওয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করে প্রতিষ্ঠানটি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন