গাইবান্ধায় গ্রামীণ বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অগ্রগতি শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুর এলাকায় অবস্থিত এসকেএস ইন-এ দাতাসংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর অর্থায়নে কেয়ার বাংলাদেশের স্ট্রেংদেনিং হাউজহোল্ড এবিলিটি টু রেসপন্ড টু ডেভেলপমেন্ট অপরচুনিটিস (সৌহার্দ্য) ৩ প্লাস এক্টিভিটির উদ্যোগে শনিবার (২ মার্চ) সকালে ‘এডভান্সিং ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশন ইন রুরাল বাংলাদেশ, কেয়ার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিভিন্ন বানিজ্যিক ব্যাংকসমূহের মধ্যেকার একটি যৌথ প্রচেষ্টা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যানসিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক (গ্রড-১) মো. আবুল বাশার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল ও সৌহার্দ্য-৩ প্লাস এক্টিভিটি কেয়ার বাংলাদেশের চিফ অব পার্টি মার্ক নসবাহ। এসময় এসকেএস মাইক্রোফাইনান্স প্রোগ্রামের কো-অডিনেটর মো ইমরান কবির উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে কেয়ার বাংলাদেশ, ব্যাংক এশিয়া, মধুমতি ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিরা, সিরাজগঞ্জের শাজাহাদপুরের স য়সার্থী নাজিরা বেগম, আমিনা বেগম, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের মনোয়ারা বেগম ও ভরতখালীর বানু শেখ বক্তব্য রাখেন। এরআগে অনুষ্ঠানের সামগ্রিক কার্যকলাপের উপর একটি উপস্থাপনা করেন সৌহার্দ্য-৩ প্লাস প্লাস অ্যাক্টিভিটি সিনিয়র টিম লিডার মান্নান মজুমদার।

প্রধান অতিথি আবুল বাশার বলেন, গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্র প্রস্তুতে কেয়ার বাংলাদেশের ভিলেজ সেভিংস এন্ড লোন এসোশিয়েসন (ভিএসএলএ) মডেল একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে আর্থিক লে-দেন, ঋণের উৎপাদনমূখী ব্যবহার ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের উপর তিনি অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সম্ভাবনাময়ী তরুণ বিশেষ করে নারী উদ্দোক্তাদের খুঁজে বের করে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের আর্থিক সহযোগিতার আওতায় নিয়ে আসার উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আর বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী স্বপ্ন, সুখী, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে উন্নয়নের মূলস্রোতের আওতায় আনার জোর দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে ঋণ গ্রহিতা জহুরা তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন. আমি কখনো ভাবিনি, শুধুমাত্র ১০ টাকা জমা দিয়ে আমার নিজের একটি ব্যাংক হিসাব হতে পারে, বাড়তি কাগজপত্রের ঝামেলা এড়িয়ে আমি স্বল্প সুদে ঋণ পেয়েছি। এই ঋণ আমি আমার পরিবারের আয় বাড়াতে কাজে লাগাব।

বিশেষ অতিথি এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের আস্থার ব্যাংক। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে ব্যাংকটি। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা সবার কাছে সহজ করেছে এনআরবিসি ব্যাংক।

সভাপতির বক্তব্যে সৌহার্দ্য-৩ প্লাস এক্টিভিটি কেয়ার বাংলাদেশের চিফ অব পার্টি মার্ক নসবাহ বলেন, ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট বানিজ্যিক ব্যাংক সমূহের ভুমিকার ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই সহযোগিতা দরিদ্র ও হতদরিদ্র নারীদের মহাজনী ঋণের দুষ্ট-চক্র ও উচ্চ সুদে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে মুক্তি দিবে। অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে কেয়ার বাংলাদেশের, ব্যাংক এশিয়া, মধুমতি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যদের মধ্যে দরিদ্র নারীদের প্রতিনিধি, সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তা, বানিজ্যিক ব্যাংকসমূহের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।