গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নেই বালাম বই, কর্মহীন নকল নবিসরা

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রায় সাত মাস ধরে নেই বালাম বই। সেই সঙ্গে টানা লকডাউনের কবলে বন্ধ রয়েছে অফিসটি। যার ফলে অফিসটির নকল নবিসরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এতে করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

জানা গেছে, সাদুল্লাপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অস্থায়ীভাবে ৩২ জন নকল নবিস কাজ করেন। কাজ আছে মজুরি আছে ভিত্তিতে যুগযুগ ধরে কাজ করছেন তারা। প্রতি পৃষ্ঠা দলিলের নকল বালাম থেকে ভলিয়ম লিখে মাত্র ২৪ টাকা পান নকল নবিসরা। সব মিলিয়ে মাসে যা লিখেন তাতেই হয় বেতন-ভাতা। এভাবে কাজ করেই পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ, কিন্তু তাতেও ঘটে বিপত্তি। দীর্ঘ প্রায় সাত মাস ধরে নেই বালাম বই। তাই মজুরি ভিত্তিতে দলিলের নকল করা থেকে বঞ্চিত তারা। একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরাও। বালাম বইয়ে দলিল লেখা না হওয়ায় হাতে পাচ্ছেন না দলিল। এনিয়ে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে গ্রাহকরা।

এরই মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সাদুল্লাপুরে চলমান রয়েছে লকডাউন। ফলে বন্ধ রয়েছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি। এমন পরিস্থিতিতে অর্থ সংকটে পড়েছেন নকল নবিসরা। এছাড়া চাকরি স্থায়ীকরণে দীর্ঘদিনের দাবিটুকুও তামাদি হয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, করোনার কারণে লম্বা লকডাইনে নকল নবিসদের খোঁজ রাখেনি সংশ্লিষ্টরা। যাদের পরিশ্রমের টাকায় বছরে রাজস্ব খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকা জমা হচ্ছে। তাদের স্থায়ীকরণের বিষয়টিও আমলে নেয়া হচ্ছেনা।

বাংলাদেশ রেক্সরা (মোহরার) নকল নবিস অ্যাসোসিয়েশনের সাদুল্লাপুর উপজেলা শাখা সভাপতি সবুজ মিয়া বলেন, এই অফিসে টানা সাত মাস যাবৎ বালাম বই নেই। যার কারণের ভলিয়ম করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী জাবেদা সম্পাদন ও তল্লাশি কাজ করে কিছুটা রোজগার করা হয়েছিল। বর্তমানে লকডাউনের কারণে অফিস বন্ধ থাকায় সেটি থেকেও বঞ্চিত আমরা।

রংপুর বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ রাহেনুল ইসলাম রবার্ট জানান, নকল নবিসদের চাকরি স্থায়ীকরণ ঘোষণা থাকলেও, আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে চরম হতাশায় ভুগছেন নকল নবিসরা। আর করোনাকালে তারা কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। তাই সরকার যেন নকল নবিসদের চাকরি দ্রুত স্থায়ীকরণ করে সে দাবিও জানান তিনি।

বালাম বই না থাকার বিষয়ে সাদুল্লাপুর সাব-রেজিস্ট্রার কামরুজ্জামান জানান, বালাম বই চেয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট তাগাদাপত্র দেয়া হয়েছে। সরবরাহ পেলে নকল নবিসরা নিয়মিত কাজ করতে পারবেন।