গাইবান্ধায় যৌতুকের মামলার শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

গাইবান্ধায় যৌতুকের জন্য রিক্তা বেগমকে নির্যাতনকারী প্রধান আসামি বাবলু মিয়াসহ সকল আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

রোববার (১৩ নভেম্বর) গাইবান্ধা জেলা শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম কোমরনই দশানী এলাকাবাসি এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রিক্তু প্রসাদ, সদর উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুজন প্রসাদ, সাম্যবাদী আন্দোলন নেতা সবুজ মিয়া, সুরবানী সংসদের সাধারন সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাবু, সাংস্কৃতিক কর্মী মানিক বাহার, কামরুজ্জামান চান, নির্যাতিতা রিক্তা খাতুন, রিক্তা খাতুনের মেয়ে নাজনীন আক্তার বৈশাখী, রিক্তার ভাই নাহিদ হাসান, আনোয়ারুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, ভুট্টু মিয়া, মুকুল মিয়া, জোবায়ের হোসেন, মেহেদী হাসান, মোছা: কনা বেগম, মোছা: দুলালী বেওয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পশ্চিম কোমরনই দশানী এলাকার মৃত ইমদাদুল হক ইদুর মেয়ে রিক্তা খাতুনের সাথে উত্তর গিদারী ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল আলিম মন্টুর ছেলে বাবলু মিয়ার সাথে ২০০৯ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই বাবলু মিয়া ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন।

এই যৌতুকের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় তার মা লাইজু বেগম, বড় ভাই লাবলু ও অনিক হাসান লেবুদের সহযোগিতায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রায়ই মারপিট করে। এ ঘটনায় গিদারী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ইদু বিষয়টি নিয়ে শালিস বৈঠক করে দেয় যাতে এ ধরণের ঘটনা আর কোনদিন না ঘটে। এরপর বিভিন্ন সময়ে বাবলু মিয়া ব্যবসা ও বাড়ি করার অজুহাতে রিক্তার পিতার কাছ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে। কিন্তু তারপরও যৌতুকের টাকার জন্য বাবলু ও তার পরিবারের লোকজন রিক্তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।

গত ২৩ আগস্ট রিক্তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে বাবলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন পরিকল্পনা করে রিক্তার হাত বেঁধে মশা মারার কয়েলের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাকা দেয়। এতে রিক্তা অসুস্থ হয়ে পড়লে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর রিক্তা খাতুন বাদি হয়ে সদর থানায় বাবলু মিয়া, তার মা লাইজু বেগম, ভাই অনিক হাসান লেবু ও লাভলু মিয়াকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন এবং বাবার বাড়িতে চলে যান। এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকেই বাবলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য রিক্তা ও তার ছোট ভাই নাহিদসহ পরিবারের লোকজনদেরকে হত্যাসহ নানা ধরণের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

ফলে আসামিদের ভয়ে রিক্তা খাতুনের পরিবার চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আসামিরা নানাভাবে হুমকি প্রদর্শন করার পরও নিজ এলাকায় ঘোরাঘুরি করলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করছে না। তাই বক্তারা আসামিদের অবিলম্বে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।