গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: সরকার

গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে।

পাশাপাশি গুজবে কান না দিতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তথ্য অধিদপ্তর।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে একজনকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা এবং কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রেক্ষাপটে সরকারের এই হুঁশিয়ারি এল।

রোববার রাতে সরকারের এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, “কোনো ধরনের কোনো গুজব বা উসকানিমূলক বক্তব্যে কান না দেওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

“গুজব সৃষ্টিকারী সম্পর্কে কোনো তথ্য পেলে তা অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।”

ফ্রান্সের একটি সাময়িকীতে হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে ক্ষোভ চলছে।

এর মধ্যেই লালমনিরহাটের বুড়িমারী বাজারে গত বৃহস্পতিবার কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে আবু ইউনুস মো. সহিদুন্নবী জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা।

ওই ঘটনায় পুলিশ, নিহতের পরিবার ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তিনটি পৃথক মামলা হয়েছে। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

জাতীয় মানবধিকার কমিশনের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও রোববার বুড়িমারীতে পৌঁছে ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

লালমনিরহাটের ওই ঘটনায় পুরো দেশ যখন স্তম্ভিত, এর মধ্যেই ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজবে শনিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

যেসব বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িও রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই হামলা হয়েছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের সেই দুই ব্যক্তিকে পুলিশ ইতোমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করেছে।

বাঙ্গুরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান বলেছেন, ভাংচুরের ঘটনায় আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। হামলার ভিডিও দেখে সেখানে আসামি করা হবে।

হামলাকারীদের ধরতে প্রশাসন ইতোমধ্যে ‘অভিযান শুরু করেছে’ বলে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর জানিয়েছেন।