গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালসহ বিভিন্ন প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠীর কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা ও করণীয় শীর্ষক সচেতনতা সভা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের হিলালী পাড়ায় জন উদ্যোগের আয়োজনে প্রান্তিক কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবা ও আমাদের করণীয় করণীয় শীর্ষক সচেতনতা সভা শনিবার (১৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়। এ কর্মসূচিতে আদিবাসী কিশোরী ও তাদের অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেন।

আদিবাসী নেত্রী মারিয়া মুর্মু’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, নারীনেত্রী ও শিক্ষক অঞ্জলী রানী দেবী, মিতা হাসান, কিশোরীদের মধ্যে সোনালী মার্ডি, স্বরস্বতী পাহাড়ী, অবলম্বন এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এ. কে.এম মাহবুবুল আলম মুকুল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নারীর জীবনে কিশোরীকাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শৈশবকাল থেকে পরিপূর্ণ নারী হওয়ার মধ্যবর্তী সময় কিশোরীকাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১০ বছর থেকে ১৯ বছরের মধ্যবর্তী সময়কালকে কিশোরী বা বয়সন্ধিকাল বলে। এই সময়ে শরীরের বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীন বেশ কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়। বাহ্যিকভাবে মেয়েদের উচ্চতা বাড়ে, শরীরের বিভিন্ন অংশে পরিবর্তন আসে এবং প্রজননতন্ত্র পরিপক্ক হতে থাকে। এই সময়ে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিকতার যথেষ্ট পরিবর্তন হয়। বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে মেয়েদের আত্মপরিচয় গড়ে উঠতে শুরু করে। হরমোনের প্রভাবের কারণে আবেগের প্রাবল্য দেখা দেয়।

বক্তারা আরও বলেন, এই সময় পুষ্টির চাহিদা শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এজন্য সুষম খাবার প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশে বিরাট একটি অংশ দারিদ্রতার চরম সীমায় অবস্থান করে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, আদিবাসী, দলিত কিশোরীরা যাতে চাহিদা মাফিক পুষ্টি পায় সেক্ষেত্রে সরকার, এনজিও, দাতা সংস্থাসমূহকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পরিশেষে শারীরিক পরিবর্তন, মানসিক পরিবর্তনসমূহ আসার আগে থেকেই কিশোরী এবং অভিভাবক উভয়ই যাতে এ ব্যাপারে সচেতন হতে পারে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পুষ্টির চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যসম্মত ন্যাপকিনের ব্যবহার, প্রজননন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নাগরিকই পারে একটি কিশোরী বান্ধব সমাজ তৈরি করতে। একই সাথে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে।