গ্রেনেড হামলার রায় ঘিরে কোনও হুমকি নেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ঘিরে কোনও ধরণের হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বলেন, ‘এ মামলায় বিচারক যে রায় ঘোষণা করবেন অবশ্যই তা কার্যকর হবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর বানিজ্য মেলার মাঠে জাতীয় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকেদের এসব কথা বলেন। এর আগে মন্ত্রী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ ফেরদৌস খান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিণ্টু। এই আসামিদের সবার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

১৪ বছর আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এই মামলার রায় ঘোষণা হবে ১০ অক্টোবর। এই রায়কে ঘিরে বিএনপিতে উদ্বেগ স্পষ্ট। এরই মধ্যে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারেক রহমানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে দেশবাসী তা মেনে নেবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ১০ অক্টোবর ঘোষণা হবে আমরা আশা করছি। ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। ঠিক একই ধরণের বিভৎস হত্যাকাণ্ড যা আমরা আগে কোনও দিন লক্ষ্য করিনি; সেটা ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট দেখলাম। একের পর এক হত্যাকান্ডগুলো ঘটানো হয়েছে, সবগুলোর যোগসূত্র একই।’

‘এগুলোর সব পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শেষ সদস্যকে হত্যা করা। ২১ আগষ্ট মামলার রায় হতে যাচ্ছে। সেদিন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহত হলেও আমরা আইভি রহমানসহ ২২ জনকে হারিয়েছি।’

বিচারক যে রায় দেবেন সেই রায় অবশ্যই কার্যকর হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রন্ত্রী বলেন, ‘রায় ঘিরে কোনও কিছু হবে না। জনগণ এই রায়ের কার্যকরিতা দেখতে চায়। অনেকে মনে করছে শান্তি-শৃঙ্খলার অবনতি হবে কিন্তু আমি মনে করি এগুলো কোনও কিছুই হবে না। সাধারণ মানুষ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ পছন্দ করে না। যারা এগুলো করে তাদেরকে ধিক্কার দেয় মানুষ। এই কারণে আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।’

পুলিশের পক্ষ থেকে সাইবার ইউনিট গঠন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমরা একটা ছোটখাটো সাইবার ইউনিট গঠন করেছি। যে অপরাধগুলো আসবে বা এখনই আসা শুরু হয়েছে সেগুলোকে মোকাবেলা করার জন্য পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। পুলিশকে সাইবার যুদ্ধ মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমরা শুধু সাইবার ক্রাইম না, যে কোনও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছি।’

‘সাইবার ক্রাইমকে শক্তিশালী করার অন্যতম কারণ গুজব ছড়ানো বন্ধ করা। মাঝে মাঝে গুজব ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের ছোট-ছোট সোনামনিদেরও রাস্তায় নিয়ে আসে; সেগুলো আমরা লক্ষ্য রাখছি।’

ঢাকা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবারের উন্নয়ন মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল রয়েছে। এসব স্টলের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ২০টি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ১৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৬টি, কৃষি মন্ত্রণালয় ১৪টি, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ১০টি এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৯টি স্টলে তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রদর্শন করছে।

মেলায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘রিয়েলিটি শো, রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কনসহ জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।