গ্রেপ্তার জবি শিক্ষার্থী খাদিজাকে যে পরামর্শ দিলেন আইনমন্ত্রী
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে মামলা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। ওই মামলায় প্রায় এক বছর ধরে খাদিজা কারাগারে রয়েছেন। কয়েক দফা তার জামিন স্থগিতও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খাদিজার দীর্ঘদিন জামিন না হওয়ার বিষয়টি সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হককে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত তার জামিন স্ট্যান্ডওভার করে রেখেছে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। একজন আইনজীবী হিসেবে, আমি তাকে (খাদিজাকে) পরামর্শ দেব, সাইবার নিরাপত্তা আইনে যখন আমরা মানহানির সাজা কারাদণ্ড বাতিল করে দিয়েছি, সে কারণে মামলাটি যখন আপিল বিভাগে উঠবে, তখন তিনি যেন বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে, আপনারা সে বিবেচনায় ব্যবস্থা নিন।
খাদিজা একজন শিক্ষার্থী, সরকার পক্ষ কেন তার জামিনের বিরোধিতা করেছে। এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, না, আমার কাছ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। যেহেতু মামলাটি এখনো বিচারাধীন, তাই এ নিয়ে আমি কথা বলবো না। তবে খাদিজার চিকিৎসার ব্যবস্থা আমি করেছি। আর আজ আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, সরকারের অবস্থান থাকবে, যখন স্ট্যান্ডওভার থেকে জামিনের আবেদন আবার শুনানির জন্য যাবে, সেই ব্যাপারে। আমার মনে হয় না, আজ কোনো বক্তব্য দেওয়া উচিত হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা। পরিবারের দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তার বাবা কুয়েত প্রবাসী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। একটি রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অন্যটি নিউমার্কেট থানায়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খাদিজাতুল কুবরাকে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। তখন তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। গত এক বছরে তার জামিন হয়নি। তার অপরাধ ছিল- একটি ফেসবুক ওয়েবিনার সঞ্চালনা করা, যেখানে একজন অতিথি বক্তা বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।
এরপর সাইবার ট্রাইব্যুনালে কয়েকবার জামিন চেয়েও না পাওয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করেন খাদিজার আইনজীবী। উচ্চ আদালত ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর দুই মামলায় আপিল আবেদন গ্রহণ করেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আপিল মঞ্জুর করে খাদিজাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত হয়। আপিল বিভাগে খাদিজার জামিন বিষয়ে সবশেষ শুনানি হয় গত ১০ জুলাই। আপিল বিভাগ তার জামিন প্রশ্নে শুনানি আরও চার মাস মুলতবি রেখেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন