ঘাস চাষে ভাগ্য বদলেছে জয়পুরহাটের অসংখ্য মানুষের

ঘাস চাষে ভাগ্যবদল হয়েছে জয়পুরহাট জেলার বিপুল সংখ্যক দরিদ্র মানুষের। ঘাসের পাশাপাশি গরুর খামার করে তারা এখন প্রতিষ্ঠিত ক্ষুদ্র দুধ ব্যবসায়ী।

এর মধ্যে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সমসাবাদ গ্রামের কৃষক রহুল আমিনের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। এক সময় অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি দিয়ে ও ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন তিনি পাকা বাড়ি করেছেন। বাড়িতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করছেন দুধের গাভি। পাশাপাশি নেপিয়ারসহ উন্নত জাতের ঘাস বিক্রি করে তিনি বছরে আয় করছেন ৫-৬ লাখ টাকা।

রহুল আমিনের এমন অবিশ্বাস্য উত্থানের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে উন্নত জাতের নেপিয়ার ও পাকচং জাতের ঘাস চাষ। ৫ শতাংশ জমি দিয়ে শুরু করে এখন তিনি আট বিঘা জমিতে ঘাষ চাষ করছেন।

রুহুল আমিনকে অনুসরণ করে একই গ্রামের ফেরদৌস, হাকিম. জিন্নাত আলী, শফিকুলসহ অনেকেই ঘাস চাষে নেমেছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে থেকে হাইব্রিড নেপিয়ার ও পাকচং ঘাস চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তারাও।

জয়পুরহাট প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় তালিকাভুক্ত ঘাস চাষের পরিমাণ হচ্ছে- সদর উপজেলায় ১৭৮ বিঘা, আক্কেলপুরে ৩৫ বিঘা, কালাইয়ে ৪০ বিঘা ক্ষেতলালে ১০ বিঘা, ও পাঁচবিবি উপজেলায় ১৫০ বিঘা। এসব জমিতে পাকচং, নেপিয়ার ও জার্মান ঘাস চাষ হচ্ছে।

পাচবিবি উপজেলার ধরঞ্জি গ্রামের মাফুজার রহমান জানান, এই গ্রামেই ১০০ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ হচ্ছে। এছাড়া উপজেলার বিরঞ্জন, বাগজানা, পাটাবুকা, সমসাবাদ, নাছেরাবাদ, ফেনতারা, চরাকেশবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে ঘাসের চাষ দিন দিন বাড়ছে।

সদর উপজেলার কাশিয়াবাড়ি এলাকার আব্দুল হামিদ জানান, সারাদিন খেটে দুই থেকে আড়াইশ টাকা রোজগার করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এখন ঘাস চাষ করে সব ঋণ শোধ করার পাশাপাশি খুব ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, গো-খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে উন্নত জাতের ঘাসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আমরা ঘাসের কাটিং (মুথা) সরবরাহ করে চাষিদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করছি। নতুন করে কেউ ঘাষ চাষ করতে চাইলে আমরা তাদেরও সহযোগিতা করবো।