চিন্তা করো না : বাবা-মাকে খুদে ফুটবলাররা

থাইল্যান্ডে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে গুহায় আটকে পড়া খুদে ফুটবলাররা তাদের বাবা-মা ও স্বজনদের দুশ্চিন্তা না করতে বলেছে।

বাব-মা কিংবা স্বজনদের কাছে লেখা চিঠিতে খুদে ফুটবলাররা বলেছে, ‘চিন্তা করো না… আমরা সবাই শক্তিশালী।’

হাতে লেখা ওই চিঠিতে খুদে ফুটবলাররা বিভিন্ন ধরনের খাবারের জন্য আবেদন করেন।

একটি চিঠিতে একজন লিখেছে, ‘শিক্ষক, আমাদেরকে অনেক বেশি হোমওয়ার্ক দেবেন না।’

এদিকে, খুদে ফুটবলারদের কোচ নিজের ভুলের জন্য অন্য একটি চিঠিতে ফুটবলারদের বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

নিজের চিঠিতে ২৫ বছর বয়সি কোচ এককাপল চানটাওং বলেন, ‘খুদে ফুটবলারদের প্রিয় অভিভাবকগণ, সব বাচ্চাই ভালো আছে। উদ্ধারকারী দল আমাদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করছেন। আমি শপথ করছি, বাচ্চাদের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো আচরণ করব এবং আমাদের প্রতি সুন্দর শব্দাবলীর জন্য ধন্যবাদ। আমি বাচ্চাদের বাবা-মায়ের কাছে বিশেষ ক্ষমাপ্রার্থী।’

গত ২৩ জুন দুপুরে ওই ফুটবল দলটি ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই গুহায় প্রবেশ করে। তবে সন্ধ্যায়ও ফিরে না আসলে তাদের খোঁজে অভিযান শুরু হয়।

নিখোঁজ ১৩ জনের ওই খুদে ফুটবল দলে ১২ জন খেলোয়াড় ও একজন কোচ রয়েছে। ওই ফুটবলারদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।

সোমবার রাতে তাদেরকে খুঁজে পায় ব্রিটেনের দুইজনের ডুবুরি দল। তাদের জীবিত সন্ধান পাওয়ার খবরে থাইল্যান্ড জুড়ে বইছে আনন্দের বন্যা। তবে তাদেরকে উদ্ধার করতে তিন/চার সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। তা ছাড়া, গুহার ভেতরে পানির উচ্চতা বাড়তে থাকায় উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

থাম লুয়াং গুহা উত্তর থাইল্যান্ডের একটি দুর্গম স্থান হিসেবে পরিচিত। বর্ষাকালে গুহার ভেতরে বন্যা হয়, যা সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

উদ্ধারকারীরা জানায়, এর আগে ওই কিশোরদেরকে উদ্ধার করতে হলে তাদেরকে ডুবসাঁতার শিখতে হবে। কারণ গুহার নিচে উদ্ধারে পথে অনেক জায়গা পুরোপুরি কর্দমাক্ত, কোথাও ১৬ ফুট পর্যন্ত পানি, কোথাও পুরোটাই পানিতে পূর্ণ, যেখানে কিছুই দেখা যায় না। এ ছাড়াও অনেক স্থান খুবই বিপজ্জনক। খুদে ফুটবলারদের উদ্ধারে গুহার পানি কৃত্রিমভাবে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন উদ্ধারকারীরা।

এদিকে, সামান গুনান (৩৮) নামের এক ডুবুরি ওই খুদে ফুটবলারদের উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছিলেন এই ডুবুরি। খুদে ফুটবলারদের গুহায় আটকে পড়ার খবর শুনে তিনি উদ্ধারকাজে যোগ দিতে আসেন।

সামান গুনান গুহার ভেতরে আটকে থাকাদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ করছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার পথে নিজের সিলিন্ডারের অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ায় দমবন্ধ হয়ে যায়। পরে তার সহকারী ডুবুরি তাকে উদ্ধার নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। থাই রাজা তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ বহন করবেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

তথ্য : বিবিসি