চীনে কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসব চলছেই

চীনের দক্ষিণাঞ্চল ইউলিনে শুরু হয়েছে কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও কুকুর ও বিড়ালের মাংস খাওয়ার এ উৎসব গুয়াংসি প্রদেশে শুরু হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকারকর্মীরা এ উৎসবকে নিষ্ঠুর বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা কর্তৃপক্ষকে মাংস বিক্রি বন্ধ করতে বলেছেন। খবর বিবিসির।

কিন্তু কুকুর বিড়ালের মাংস বিক্রির স্টলগুলো থেকে জানানো হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সরকারিভাবে তাদের কোনো কিছু জানানো হয়নি। গত ১৫ মে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরকম কোনো উৎসব তারা বন্ধ করতে বলেননি।

বুধবারও ইউলিনের মাংসের দোকানে মেরে ফেলা কুকুরকে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। সেখানে কুকুর বিড়ালের মাংস বিক্রিও হচ্ছে। আশপাশেই অনেক পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে এ নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেননি।

ইউলিনের একজন পরিবেশবাদী বলছেন, নির্মমভাবে কুকুরকে হত্যা করে মাংস বিক্রির ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো রকম পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

গত বছর এ উৎসব বন্ধের জন্য এক কোটি ১০ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিল পরিবেশবাদীরা। তবে স্থানীয় সরকার বলেছে, এ উৎসবের সঙ্গে সরকারি কোন সমর্থন নেই।

চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্য দেশগুলোতে কুকুরের মাংস খাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে প্রায় পাঁচশ বছর আগে থেকে। সেখানে বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, কুকুরের মাংস খেলে গরমের মাসগুলোতে শান্তিতে থাকা যাবে। কিন্তু ইউলিনে যে উৎসব শুরু হয়েছে তা নতুন। এর বয়স মাত্র কয়েক বছর।

ইউলিনের অধিবাসী ও ব্যবসায়ী বলেন, এ উৎসবে পশুগুলোকে হত্যা করা হয় মানবীয় উপায়ে। কিন্তু পরিবেশবাদীরা বলছেন, পশুগুলোকে হত্যা করা হয় নৃশংস উপায়ে এবং তা করা হয় প্রকাশ্যে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রহার করে হত্যা করা হয়। আবার জীবিত অবস্থায়ও রান্না করা হয়।

উৎসবকে সামনে রেখে কুকুরগুলোকে ধরে ছোট্ট খাঁচায় আটকে রাখা হয়। অনেক কুকুর অন্য শহর থেকে গাদাগাদি করে লরিতে ভরে নিয়ে যাওয়া হয় ইউলিন শহরে। তাদেরকে রাখা হয় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। এতে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, দশদিনের এই উৎসবে দশ হাজারের বেশি কুকুর ও বিড়াল হত্যা করে ভক্ষণ করা হবে। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।