চুয়াডাঙ্গায় কারাগারে থাকা চুরির আসামির মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে থাকা মিঠু মিয়া (৪০) নামের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।
মিঠু মিয়া চুরি মামলায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে বন্দী ছিলো। তার দামুড়হুদা থানার মামলা নং—১৮/২৪ ও ৩৭৯/৪১১।
মিঠু মিয়া দামুড়হুদার হোগলডাঙ্গা গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে।
এদিকে, মিঠুর পরিবার দাবি, মিথ্যে চুরির অপবাদে তাকে গণপিটুনি ও পুলিশি নির্যাতনে মিঠুর মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনার যে কোনো মূল্যে আমরা সুুষ্ঠু তদন্তসহ দোষিদের কঠোর শাস্তি চাই।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারী) বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান, সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডা. আল ইমরান জুয়েল।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মিঠু মিয়া গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি চুরি মামলায় কারাগারে আসেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সেসময় দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মিঠু মিয়ার বড় ভাই বাবলু, বড় বোন দলিয়ারা খাতুন, দুলাভাই ছুরাপ হোসেন, চাচা আব্দুল হান্নান ও প্রতিবেশী বাবু জানান, মিঠু রাজ মিস্ত্রির কাজ করতো। ঘটনার রাতে মিঠু রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মোবাইলে কথা বলছিল। একপর্যায় গ্রামের শেষ পাড়ার কয়েকজন তাকে ধরে বেধড়ক মারপিট করে ও রাস্তায় ফেলে চটকায়। পরে তাকে নতিপোতা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ভগিরথপুর গ্রামের ইকতার মেম্বারের বাড়ি আটকে রাখে।
সংবাদ পেয়ে আমরা মেম্বারের বাড়িতে গেলে মিঠুর সাথে আমাদের দেখা করতে দেয়নি। পরে তাকে ভগিরথপুর ক্যাম্প পুলিশের কাছে দেয়া হয়।
মিঠুকে ক্যাম্পে দেয়ার পর দুলাভাই ছুরাপ হোসেন তার সাথে দেখা করে। সেসময় মিঠুর কান ও নাক দিয়ে রক্ত পানি ঝরছিল বলে জানান ছুরাপ।
দুলাভাই ছুরাপ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ক্যাম্পে মিঠুকে নেয়ার পর মেম্বার ইকতার আমাকে বলে পুলিশকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে পুলিশ রাতে মিঠুকে মারবে। কিন্তু ওই রাতে আমরা টাকা ম্যানেজ করতে পারেনি।
নতিপোতা ইউনিয়নের ভগিরথপুর গ্রামের ইকতার মেম্বার এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আল ইমরান জুয়েল জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা কারাগারের পুলিশ সদস্যরা এক কয়েদীকে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তির ২০—২৫ মিনিট ব্যবধানে তাঁর মৃত্যু হয়।
তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ভ্যান চুরির অপরাধে স্থানীয়রা মিঠু মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পেঁৗছে তাকে আটক করে। পরদিন সকালে তাকে চুরির মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয় বলে জানান দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন