চুল পাতলা হওয়ার জন্য দায়ী কোন খারাপ অভ্যাস?
কিছু খারাপ অভ্যাসের ফলে চুল উঠে পাতলা হয়ে যায়। যদি আপনি ঘন‚ কালো লম্বা চুল চান।
তাহলে কিছু খারাপ অভ্যাস আপনাকে দ্রুত পাল্টাতে হবে। আসুন, জেনে নিই সেই খারাপ অভ্যাসগুলো কি কি :
চুল পরিষ্কার না করা : অনেক মহিলারাই সময় পান না কিন্তু নিয়মিত চুল পরিষ্কার করাটা খুব জরুরি। আগে বলা হতো সপ্তাহে তিনবার শ্যম্পু যথেষ্ট। কিন্তু দিন কে দিন দূষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে। আজকাল ডারমাটোলজিস্টরা বলেন যে মুহূর্তে মাথার স্কাল্প অয়েলি হয়ে যাবে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে রোজ মাথা ধুয়ে নিতেও পারেন।
অতিরিক্ত তেল লাগানো : হট অয়েল ম্যাসাজে করলে চুলের গোড়া খুলে যায় এবং চুলের বারবাড়ন্তে সাহায্য করে। কিন্তু এর ফলে কিন্তু ছিদ্র বন্ধও হয়ে যেতে পারে। আমাদের শরীরেই তেল উৎপন্ন হয় যা চুলের গোড়ার জন্য যথেষ্ট।
তাই তেল লাগানোর সময় মাথার স্কাল্পে তেল না ঘষে চুলের ডগার দিকে কনসেনট্রেট করুন। মাথায় তেল লাগিয়ে বাইরে না বেরোনই ভালো। ডিপ স্কাল্প অয়েল ম্যাসাজ করলে তা এক ঘন্টা রেখে মাথায় শ্যাম্পু করে নিন।
বিভিন্ন কেমিক্যালসের অতিরিক্ত ব্যবহার : চুলের স্টাইলিং এবং স্ট্রেটনিং করার জন্য বিভিন্ন হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। এই হেয়ার স্প্রেগুলো ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হয়। নিয়মিত হেয়ার স্প্রের ব্যবহারে চুল কমজোরী হয়ে ভেঙে যাবে। এছাড়াও চুল ও উঠে যাবে। তাই যতটা সম্ভব এইসব হেয়ার স্প্রে না ব্যবহার করাই ভালো। একান্তই যদি ব্যাবহার করতে হয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্যাম্পু করে নিন।
কালারিং আর ব্লিচিং : মাথার রং-এ যে সব কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হয় তা চুলের জন্য খুব ক্ষতিকর। এতে হেয়ার প্রচন্ড ড্রাই এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়। একই সঙ্গে চুল উঠেও যায়। কালার করার আগে অনেকেই আবার চুল ব্লিচ করে‚ যা আরো বেশি ক্ষতিকারক। যারা হেয়ার কালার ব্যবহার করেন তারা কালার্ড হেয়ারের জন্য তৈরি শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। হেনা প্রাকৃতিক উপায়ে চুল রং করে‚ তাও ব্যবহার করতে পারেন।
দ্রুত চুল আঁচড়ানো : অনেকের ধারণা দ্রুত চুল আঁচড়ালে মাথায় রক্ত চলাচল ভালো হয়। এটা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। উল্টে এর ফলে স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি তৈরি হয় যা চুল কমজোরী করে দেয়। তাই তাড়াতাড়ির মধ্যে থাকলেও আসতে আসতে চুল আঁচড়ানোর চেষ্টা করুন।
কম দামি হেয়ার অ্যাকসেসরি : আমাদের মধ্যে অনেকেই মাথায় বিভিন্ন হেয়ার ক্লিপ‚ হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসি। কিন্তু বাজে মেটিরিয়েল দিয়ে তৈরি হেয়ার অ্যাকসেসরি না ব্যবহার করাই ভালো। কারণ তা চুলের স্কাল্পের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও চুলে সহজেই জট পড়ে যায়। সব সময় কোয়ালিটি দেখে তবে মাথায় লাগানোর জিনিস কিনুন।
বেশিক্ষণ চুল বেঁধে রাখা : বেশিক্ষণ চুল বেঁধে রাখলে চুলের ফলিকলসের ক্ষতি হয়। খুব বেশি সময়ের জন্য চুল টেনে বেঁধে রাখবেন না।
ভিজে অবস্থায় চুল আঁচড়ানো : মনে রাখবেন ভিজে চুলের গোড়া খুব নরম হয়ে থাকে। তাই এই অবস্থায় চুল আঁচাড়ালে অনেক বেশি চুল উঠে যাবে। তাই প্রথমে চুল শুকিয়ে নিয়ে তারপর আঁচড়ান।
বারবার হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা : মাঝেসাজে হেয়ার ড্রায়ারের সাহায্য চুল শুকিয়ে নিতেই পারেন। কিন্তু তা নিয়মিত অভ্যাস বানাবেন না। এর ফলে কিন্তু চুলের এতটাই ক্ষতি হবে যা ঠিক করা যাবে না।
আনহেলদি খাবার : অতিরিক্ত মদ্যপান বা অতিরিক্ত কাফেন খেলে চুলের ক্ষতি অনিবার্য। হেলদি ব্যালেন্সড ডায়েট খাওয়ার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখুন ডায়েটে যেন বেশি করে প্রোটিন থাকে। শরীরে যদি নিউট্রিয়েন্টস কমতি হয় তাহলে অতিরিক্ত চুল উঠে যাবে। পারলে মাঝে মধ্যে শরীর ডিটক্স করিয়ে নিন।
স্টেস : স্ট্রেসের ফলে মাথা ব্যথা বা চোখের তলায় কালি পড়ার সঙ্গে চুল উঠে যাওয়ারও সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। সব সময় চিন্তার মধ্যে থাকলে দ্রুত মাথায় টাক পড়ে যাবে। জীবন থেকে যতটা পারবেন স্ট্রে দূরে রাখুন। নিয়মিত মেডিটেশন করুন।
সঠিক পরিমাণে না ঘুমোনো : দিনে অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করুন। ৭ ঘন্টার কম ঘুমোলে কোনদিনই হেলদি হেয়ার হবে না। এই কারণেই একে ‘ বিউটি স্লিপ ‘ বলা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন