চুয়াডাঙ্গায় ঘুমের মধ্যে শিশুর করুণ মৃত্যু

মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত অথচ অসাবধান বশতঃ ঘুমের মধ্যে সেই মায়ের পায়ের নিচে কম্বলচাপা পড়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হলো জারা খাতুনের।

জন্ম হয়েছিল ঠিকই। তবে বছরও পার হলো না তাঁর। প্রথম জন্ম বার্ষিকীর কথাও ছিল সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারী)। তার আগেই পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিতে হলো জুনায়েদ তাসমিন ওরফে জারা খাতুনের। বড় আয়োজন করে জন্মদিন পালন করার কথা ছিল পরিবারের। কিন্তু খণ্ড খণ্ড হয়ে গেল পিতা-মাতার সখের সেই স্বপ্ন। রবিবার দিবাগত (১২ ফেব্রুয়ারী) রাত দুইটার দিকে মৃত্যু হয় তাঁর।

জুনায়েদ তাসমিন ওরফে জারা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে। দুই ভাই বোনের মধ্যে জারা ছিল ছোট।
পিতা জামাল উদ্দিন গিরিসনগর সরকারি প্রাথবিক বিদ্যালয় এবং মা শিরিন সুলতানা ছয়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

ঘটনার বর্ণনা জানতে চাইলে জারা খাতুনের চাচা বলেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে রাতে ঘুমিয়ে ছিল জারা খাতুন। ঘুমের ঘোরে নড়াচড়া করতে করতে মায়ের পায়ের নিচে চলে যায়। সেসময় মুখের ওপর কম্বলের চাপা পড়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায় মেয়ে।

রাতে জামাল উদ্দিন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে উঠলে মেয়েকে পাশে দেখতে না পেয়ে এদিক ওদিক খুঁজতে থাকনে তিনি। পরে কম্বল তুললে তার মায়ের পায়ের ওপরে কম্বলের নিচে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। মেয়ে নড়াচড়া না করলে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বাবা-মা পাগল প্রায় অবস্থায় সান্ত্বনা নিচ্ছেন স্বজনদের। এই দম্পত্তির একমাত্র বড় ছেলের নাম সিয়াম সিদ্দীকি (৭)।

এ ঘটনায় পুরো গ্রামজুড়ে শোকের বাতাস বইছে। বেলা ১১ টার দিকে গ্রামের কবরস্থানে দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল বলেন, গত রাত ৪ টার দিকে পরিবারের সদস্যরা জারা খাতুনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করি।