চুয়াডাঙ্গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে স্বামী স্ত্রী ও মেয়ে ঢাকায় রেফার্ড
চুয়াডাঙ্গায় আর্থিক লেনদেনের জের ধরে ভাই ও ভাতিজারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সদর উদ্দীনের ছেলে আব্দুল ওয়াদুদ (৫৫), তার স্ত্রী তারকিনা খাতুন (৪০), মেয়ে বর্ষা খাতুন (১৮) ও প্রতিবেশী মঙ্গল আলীর ছেলে অহিদুল ইসলামকে (৫১) মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সেসময় আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা দিয়েও অবস্থার অবনতি দেখা দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
জানা গেছে, কয়েক বছর আগে আব্দুল ওয়াদুদ নিজ খরচে তার মেজভাই মোতালেবকে সৌদিতে পাঠায়। সেই টাকার পাওনা হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবী করে ওয়াদুদ। কিন্তু মোতালেব টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুই ভাই ও ভাইয়ের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে এর আগেও হামলার ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় ওয়াদুদকে কুপিয়ে জখম করে ভাই মোতালেব। পরে ওয়াদুদ বাদী হয়ে ভাই ও ভাতিজাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। সে মামলায় ওয়ারেন্ট বের হলে গত সোমবার পুলিশ আসামীদের ধরতে খাসককরা গ্রামে যায়। তারা টের পেয়ে পালিয়ে যায়। পরে রাগান্বিত হয়ে ফের বিবাদে জড়ায় ওয়াদুদ ও মোতালেব । মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে খাসকররা বাজারে ওয়াদুদ তার দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরছিল। বাড়ীর কাছাকাছি পৌঁছালে সেসময় ভাতিজা রাকিব, সোহেল, ও ভাই কাসেদ তাকে কুপিয়ে জখম করে। এতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে বাড়ির ভেতরে গিয়ে ওয়াদুদের স্ত্রী ও মেয়েকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সেসময় প্রতিবেশী অহিদুল ঠেকাতে আসলে তাকেও রক্তাক্ত জখম করে তারা।
স্থানীয়রা প্রথমে তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেও প্রাথমিক চিকিৎসা করেও আশঙ্কাজনক মনে হলে একই পরিবারের আব্দুল ওয়াদুদ, তার স্ত্রী তারকিনা খাতুন ও মেয়ে বর্ষা খাতুনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
এ হামলার কথা স্বীকার করে জখম তারকিনা খাতুনের ভাই লাভলু হোসেন বলেন, বিদেশে পাঠানোর পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ওয়াদুদকে এর আগেও একবার ভাই কাসেদ, ভাতিজা সোহেল ও রাকিব কুপিয়ে জখম করে। সেসময় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তারা। পরে কোর্ট থেকে ওই মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট বের হলে তারা রাগান্বিত হয়ে আবারও একজোট হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল জানান, আহত ৪ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হামলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে তাদের।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, দু পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন