চুয়াডাঙ্গায় শীতের ভয়াবহ প্রকোপে স্থবির জনজীবন

শীতের কাছে হার মেনেছে চুয়াডাঙ্গার মানুষ। যবুথবু অবস্থার মধ্যদিয়ে জনজীবন হয়ে পড়েছে স্থবির। গত সপ্তাহখানেক ধরেই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। গত কয়েকদিন ধরে বিকট ঠাণ্ডার সাথে হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বাড়ায় মানুষ শূন্য হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার রাস্তাঘাট।

এরই অংশ হিসেবে শনিবার (০৭ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিন কিম্বা রাত বিশেষ করে যারা খেটে খাওয়া মানুষ; পেটের দায়ে বের হয়েছেন তাদেরকে ছাড়া বাজারঘাটে তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না ভোক্তাদেরও। শীতের তীব্রতা থাকায় দিনমজুরদেরও কাজের দেখা মিলছে না। এতে করে শীতের কষ্টে যেমন দিন পার করছে তেমনী কর্মযজ্ঞ নগন্য থাকায় জীবনযাত্রায় দারুণভাবে প্রভাব পড়েছে তাদের। সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব অনটন। তীব্র ঠাণ্ডায় ঘরবাড়ীতেও মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। লেপ মুড়িয়ে ঠিকমত শীত নিবারণ হচ্ছে না চুয়াডাঙ্গার মানুষের। পুরো পৌষ মাসজুড়ে শীতের সাহসিকতা থাকায় ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেনা মানুষ। ফলে তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গাবাসী।

এদিকে, পৌষ মাষের শেষের দিকেও শীতের কমতি নেই বরং হিমেল বাতাসের আর্দ্রতা বাড়তেই আছে। আজ (০৭ জানুয়ারী) শনিবারও সকাল ৬টার দিকে যেন হালকা ঝড়ের আভাস ফুটে ওঠে সাথে পড়তে থাকতে ঝিরিঝির কুয়াশা। শীতকে ঘিরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই অসহনীয় হারে বাড়ছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের রোগীর চাপ। হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্সদের।

অপরদিকে, তীব্র ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশায় মাঠের ফসলী ধান রক্ষা করতে সকালের শিশির সরাতে ও রাতের বেলায় চারা ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সতর্ক করা হচ্ছে চাষীদের।

গত ২/৩ দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে চুয়াডাঙ্গায়। এতে আরও জড়সর হয়ে পড়েছে মানুষ। কুয়াশা থাকার পাশাপাশি দিনভর দেখা মিলছে না সূর্যের। পাশাপাশি বাতাসের কারণে আরও তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। মাঝে মাঝে সূর্যের আলো কিছুটা ফুটে উঠলেও তাতে কোন লাভ হচ্ছে না শীত নির্বারণে।

(০৭ জানুয়ারী) শনিবার সকালেও অসহায় ছিন্নমূল মানুষের অনেককেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ দেখা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে জেলার চারটি উপজেলায় ২৪ হাজার কম্বল বিতরণ করেছে। আরও কম্বল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাবে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।