জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও অর্থের সংশয়ে দিনকাটছে প্রিয়া রানী দাসের
একজন অদম্য মেধাবী ছাত্রীর নাম প্রিয়া রানী দাস। সে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের পৌরশহর কালীপুর মধ্যম তরফ এলাকার বাসিন্দা।
ছোটবেলা থেকেই জীবন সংগ্রামে শত কষ্ঠের মধ্যেও পড়াশোনা ছাড়েনি। বাবার অভাব অনাটনের সংসারে চালিয়ে গেছে লেখাপড়া। একে একে অতিক্রম করেছে পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি।
যথাক্রমে গৌরীপুর সরযূবালা থেকে পিএসসি, বালিকা বিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসি এবং সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করে ২০২২ সনের জানুয়ারী মাসে ময়মনসিংহের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং- ফোকাসে ভর্তি হয়। সেখানে টানা ছয়মাস প্রতিদিন ৭ ঘন্টা করে ক্লাস এবং প্রতি সপ্তাহে ক্লাসটেস্ট দেয়।
সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে মেধা তালিকায় স্থান লাভ করে। পরে ফোকাস কোচিং-এর পক্ষ থেকে তাকে সম্মাননা স্মারক, উপহার সামগ্রী ও সনদ প্রদান করা হয়।
এদিকে প্রিয়া রানী আওয়ার নিউজ বিডিকে বলেন, দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২৯ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। এরপর বইপত্র, বেডসহ ২০২৩ সনের ১৫ জানুয়ারীর মধ্যেই থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেলে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। একবছর ঢাকা শহরে ভাড়া বাসায় থাকতে হবে। আর হোস্টেলেও রয়েছে সীমিত সংখ্যক। আমার তো উপরস্থ মহলে এমন কেউ নেই যে, সিটের ব্যবস্থা করে দিবে।
সে আরোও বলে, ছোটবেলা থেকে পরিবারের করুন অবস্থা দেখে পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাবা মায়ের দুঃখ ঘুচাবো পাশাপাশি দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবো। এমনটাই স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা পুরনের লক্ষ্যে পড়ালেখা করে এগিয়ে যেতে চেয়েছি।
প্রিয়া রানির বাবা দিলীপ কুমার দাস জানান, প্রিয়া মাঝে মাঝে পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কথা ভেবে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে যায়। তাই সে পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে খরচ যোগায়।
এদিকে জানাযায়, প্রিয়ার বাবা আগে টিউশনি করতেন কিন্তু পুরাতন সিলেবাসের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে তিনি টিউশনি ছেড়ে দিয়েছেন। একটি পত্রিকার লেখালেখি ও বিজ্ঞাপনের উপর নির্ভরশীল প্রিয়ার পরিবার।
ভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রিয়া আরোও বলে, অভাবের সংসারে আদৌ কি পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে কিনা তার জানা নেই। এদিকে তাদের পড়ালেখায় ও আগের ধারকর্জের টাকা পরিশোধ করার জন্য বসতবাডির জায়গা বিক্রি করা হয়েছে। এখন তারা ভাড়া বাসায় থাকে। সেখানে নিয়মিত বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় বাসার মালিক বসতঘরটি সংষ্কার করেনা। প্রবল ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে ঘরের আসবাবপত্র ভিজে একাকার হয়। পারিবারিক দৈন্যতার মাঝেও ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে সে। এহেন পরিস্থিতিতে সে তাঁর স্বপ্নপুরণ ও দেশের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। তাঁর মতো মেধাবী ছাত্রীকে কি আমরা সকলেই পারিনা একটু সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতে?
পরিশেষে সে দেশের বিত্তবান ও সহৃদয়বান ব্যক্তিবর্গের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছে। তার বাবার মোবাইল নং ০১৯২৭৬৩৯৮৭৯ এবং গৌরীপুর জনতা ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব নং ১২০৩১/১ ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন