জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ভুগছে বাংলাদেশে

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে বাংলাদেশে। কয়েক বছর ধরে একের পর এক বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর পাহাড়ধসের ঘটনা ডেকে আনছে মানবিক বিপর্যয়। এ অবস্থায় পরিবেশ ও প্রকৃতিবিরোধী তৎপরতা বন্ধের তাগিদ দিচ্ছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।

নীল আকাশে কালো ধোঁয়ার দাপট। প্রতিনিয়ত ইটভাটা, কলকারখানা কিংবা যানবাহনের ধোঁয়া মিশে যাচ্ছে বাতাসে। এ কারণে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওজোন স্তর, বাড়ছে সূর্যের প্রখরতা, ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছে উষ্ণতা।

এছাড়া নদ-নদী-জলাশয় ভরাট, পানি দূষণ ও বৃক্ষ নিধনের কারণে বিষিয়ে উঠছে চারপাশের পরিবেশ। যা ত্বরান্বিত করছে জলবায়ুর পরিবর্তনকে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আতিক রহমান বলেন, আমরা একটা তীব্রতার মধ্যে আছি। তাপের তীব্রতা, খরার তীব্রতা, বৃষ্টির তীব্রতা এবং দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্তটা বেড়ে গেলো।

সাম্প্রতিককালে দফায় দফায় ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাওরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ও পাহাড় ধসের মতো ঘটনাও ঘটছে প্রতি বছরই।

জার্মানিভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা জার্মান ওয়াচের ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় ৬ষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, কঠিন সমস্যার মধ্যে আমরা আছি। মানুষের স্বাভাবিক জীবনমানের ওপর এর প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণাঞ্চল-উত্তরাঞ্চলে এটি দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে।

তথ্যানুসারে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২শটি দুর্যোগ আঘাত হেনেছে বাংলাদেশে। দিন যতো যাচ্ছে, দুর্যোগের হার ততোই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন তারা।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, এই দেশটাকে যেভাবে ভালোবাসা দরকার সেভাবে ভালোবাসতে পারছি না। এটাই আমাদের সমস্যা। এর কারণে আমরা গাছ কেটে ফেলছি, নদী দখল করছি।

তাদের মতে, প্রকৃতির ওপর আঘাত, আরো ভয়ংকর করে তুলছে প্রকৃতিকেই। যা ক্রমেই ঘনীভূত করছে বিপদ-শঙ্কার কালো মেঘ।