জীবন্ত পুড়ছে রোহিঙ্গারা, শিশুদের গলা কাটছে সেনারা : প্রত্যক্ষদর্শী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর ভয়াবহ অত্যাচারের বর্ণনার সঙ্গে যোগ হলো শিশুদের শিরোশ্ছেদ এবং অন্যদের জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ।

মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা বহু প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় ফুটে উঠেছে দেশটির সেনাবাহিনীর এই মারাত্মক কর্মকাণ্ডের চিত্র।

মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে ‘উস্কানিমূলক’ বিবৃতির এক সপ্তাহ পর এ তথ্য প্রকাশ পেল। টেলিগ্রাফ জানায়, ওই বিবৃতির পর জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রফট মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি’কে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণের আহ্বান জানান।

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান দমনপীড়নের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা এবং ‘তথ্য কমিটি’র অনলাইন বিবৃতির মাধ্যমে দেশের বাকি জনগণকে রোহিঙ্গা ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়ার অভিযোগে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক ফেলিম কাইন টুইটারে বলেন, সম্ভাব্য মারাত্মক উস্কানিমূলক এই পোপাগান্ডার মধ্য দিয়ে অং সান সু চি নীচতার নতুন মাত্রায় পৌঁছেছেন। এটা তার নেতৃত্বের ব্যর্থতা।’

টানা ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার ব্যাংকক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস রাথেডং অঞ্চলের ছুট পিয়িন গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা প্রত্যক্ষদর্শীদের মর্মস্পর্শী বর্ণনার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, প্রায় ২শ’ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় আদিবাসী রাখাইন গ্রামবাসীর হাতে নিহত হয়েছে।

আরও বলা হয়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গা পুরুষদের বড় একটি দলকে আটক করে বেঁধে কাছাকাছি একটি বাঁশের ঝুপড়ির ভেতর নিয়ে আটকে ফেলে। এরপর সেটিতে আগুন ধরিয়ে ওই দলটিকে জীবন্তই পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট শিশুদের মাথা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে সেই প্রতিবেদনে জানানো হয়।