জীবিকার তাগিদে আজ শিশুটির কাঁধে সংসারের হাল

যে সময় তার স্কুলে পড়াশুনা বা মাঠে খেলার কথা ঠিক সেই সময়েই জীবিকার তাগিদে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে শিশু শাহাদৎ (১২) হোসেনকে। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে বড় হয়ে চাকুরী করবে সে।

কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবে পূরন হলো না তার। দু’বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছে। বাবার মৃত্যুর কথা মায়ের মুখে শুনে আসছে সে। ২য় শ্রেনী থেকে বাদাম বিক্রি করে এখন ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ে শাহাদত। কোভিড-১৯ করোনাকালে স্কুল বন্ধ। তারপরও থেমে নেই শিশু শাহাদৎ হোসেন। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু-বেলা দু-মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য বাদাম বিক্রিই এখন তার একমাত্র মাধ্যম।

বড় ব্যবসা করেও অনেকেই জীবনে সফলতা পায়না। কিন্তু শাহাদত তার আন্তরিকতা এবং সততা দিয়ে এখন পর্যন্ত টিকে আছে। শুধু তার স্বপ্নপূরণে বাঁধা। কারণ এই ব্যবসা করেই জীবিকা নিবার্হের জন্য পরিবারকে নিয়ে খেয়ে পড়ে বেঁচে আছে শাহাদৎ হোসেন।

জানা যায়, শাহাদৎ হোসেন প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত তার এ ঝুড়ির উপর বাদাম নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন হাট বাজারে দাঁড়িয়ে থেকে বাদাম বিক্রি করে।

যেদিন বেচাকেনা ভাল হয় সেই দিন লাভ একটু বেশি হয়। এদিয়েই কোনমত দিন চলে যায় তার। প্রতিটি হাটে বাজারে একটি ঝুড়ি কাঁধে নিয়ে বুট-বাদাম বিক্রি করে সে। তাঁর বাড়ী গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কোমরপুর এলাকার সোনারপাড়া গ্রামে। সারাবছর এই ছোট ব্যবসা করেই সে তার জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বাদাম ভাজার সময় সাহায্য করে তার মা ও বড় বোন। মা বোনকে নিয়ে তার ছোট সংসার। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই মা ও বোনকে নিয়ে নানার বাড়ীতে বসবাস করে সে। বসতভিটা না থাকায় নানার বাড়ীতেই আশ্রয় নিয়েছেন শাহাদত এর পরিবার। পলাশবাড়ী উপজেলার কোমরপুর সোনার পাড়া গ্রামের মৃত শরিফুল এর ছেলে শাহাদত হোসেন। এই হাটে তার অবস্থান মোটামুটি দু-তিনটি স্থানে। ব্যবসার নির্ধারিত কোন স্থান নাই। এ ব্যবসা করেই মা বোনের মুখে ডাল ভাত তুলে দেন শাহাদত হোসেন।

শাহাদত হোসেন এর সাথে কথা বললে সে জানায়, আমি সাবদিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র ছিলাম। সংসারে অভাব-অনটনের কারনে রাস্তায় রাস্তায় বাদাম বিক্রি করি। কারন সংসারে তো আয়ের কোন উৎস নেই তাই জীবন-জীবিকার তাগিদে বাদাম বিক্রির পথ বেঁচে নিয়েছি। বাদাম বিক্রি করেই কষ্টে চলে সংসার।