ঝালকাঠির রাজাপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা; নারীসহ আহত ৪
ঝালকাঠির রাজাপুরের বড় গালুয়া গ্রামে পাওনা ৪শ’ টাকা না দিতে পারায় দিনমজুর নাঈম হাওলাদারের বাড়িতে কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা দলবল গিয়ে বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরসহ মধ্যযুগীয় কায়দায় নিযার্তন করে নারী ও শিশুসহ ৪ জনকে আহত করে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ওই বাড়িতে সরেজমিনে গেলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ইজিবাইক ও মোটর সাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। তাদের কারেন ওই এলাকায় স্কুল মাদ্রাসা ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে গোপনে নাঈমের স্ত্রী তানিয়া বেগম থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলে সন্ধ্যা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কিশোর গ্যাং চক্রের ভয়ে আহত নাঈম হাওলাদার (২৬) ঘরের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। অপর আহতরা হল— নাঈমের স্ত্রী শিশু সন্তানের জননী তানিয়া বেগম (২৩), নাঈমের মা মিনারা বেগম (৪০), মামি লাইজু বেগম (৪৫)।
আহত নাঈম তার মা মিনারা বেগম ও স্ত্রী তানিয়া বেগম অভিযোগ করে জানান, উপজেলার বড় গালুয়ার পাকাপুল এলাকার ছোমেদের ছেলে ফেরদৌসের কাছ থেকে আমড়ার ব্যবসা শ্রমিক নাঈম ৫ দিন আগে বাটন মোবাইল জামানত রেখে ৪শ’ টাকা ধার আনেন। ওই ধারের টাকা গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গালুয়া মাদ্রাসা এলাকায় আমড়ার বস্তা বাধার কাজ করার সময় পাওনা টাকা চাইলে নাঈমের কাছে টাকা না থাকায় দিতে অপারগতা করলে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পযার্য়ে ফেরদৌস তার দুই সহযোগী কাঞ্চনের ছেলে ফয়সাল ও আব্দুর রবের ছেলে রাব্বি মিলে নাঈমকে বেধরক মারধর করে। মারধরে ধস্তাধস্তির এক পযার্য়ে নাঈমের হাতে থাকা আমড়ার বস্তা বাধার রশি কাটার জন্য ছুরির আচড় লাগলে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ধ্যায় নাঈমের বাড়িতে গিয়ে ফেরদৌস, ফয়সাল ও রাব্বিসহ ২০/২৫ জন মিলে দিনমজুর নাঈমের বাড়িতে নাঈমকে মারধর করে হামলা চালিয়ে বসতঘরের বিভিন্ন অংশের ভেড়া ও আসবাপত্র ভাঙচুর করে। নাঈমকে রক্ষা ও ভাঙচুরে বাধা দিতে গেলে তার মা মিনারা বেগম, স্ত্রী তানিয়ে বেগম ও মামি লাইজু বেগম এগিয়ে এলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নিযার্তন করে এবং তানিয়া ও মিনারার পড়নের পোষাক ছিড়ে ও চুল টেনে ছিড়ে টানা হেচরা করে মাটিতে ফেলে পদদলিত করে অমানুষিক নিযার্তন করে। মা তানিয়াকে নিযার্তন করায় এঘটনায় ২ বছর বয়সী শিশু জান্নাতুল আতঙ্কিত হয়ে ভয় পেয়েছে। মোবাইল ফোন, সোনার আলঙ্কার ও মালপত্র লুটে নেয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার বড় গালুয়ার পাকাপুল এলাকার ছোমেদের ছেলে অভিযুক্ত ফেরদৌসের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও ফোন রিসিভ না করে কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখে।
ঝালকাঠির সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) মাসুদ রানা জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন