আওয়ামীলীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যাবে না : এনামুল হক শামীম

পানিসম্পদ উপ-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যাবে না। এ দলের শিকড় অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। উর্দি পরে ক্ষমতারোহণ করা দল নয়। এই দলের জন্মই হয়েছিল মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, মুক্তির জন্য। দেশের ৭০ ভাগ মানুষ এখনো বঙ্গবন্ধুকন্যাকে সমর্থন করে। কাজেই এই দলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা সম্ভব না। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে পরাজিত হতাশ বিএনপির নেতাকর্মীরা সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলতে চাইছেন। কিন্তু সম্ভব না।

জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (১৮ আগস্ট) শরীয়তপুরের সখিপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে থানা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, বিএনপি সেনা ছাউনিতে জন্ম। খুনি জিয়াউর রহমান উর্দি পরে ক্ষমতা দখল করে। পরে নিজেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করারও চেষ্টা করে। আর্মি রুলস ভঙ্গ করে একটা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও করে। ভোট কারচুপি ও ভোটচুরির কালচার তো সেখান থেকে শুরু। এরপর বিএনপি নামক সেই দল করে। সেই দলের নেতারা বলেন, সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে। তিনি বলেন, আপনারা তো কত বছর হলো আন্দোলন করছেন? একদফা দিয়ে পতন ঘটাবেন? পেরেছেন? জনগণ আপনাদের সাথে আছে? কারণ আপনারা তো জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করেন না।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামীম বলেন, আপনারা ক্ষমতায় থাকলে অর্থ লুটপাট, দুর্নীত। আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে মানুষ হত্যার রাজনীতি করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে। সে কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে সর্বজনীন পেনশন ঘোষণা করেছেন। মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যেই ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা চালু করেছেন। সরকার ২২ প্রকার ভাতা দেয়া হয়।

তিনি বলেন, যে কুষ্ট রোগীর পাশে আত্মীয়-স্বজনও যায় না, যে বেদে সম্প্রদায় নৌকায় বসবাস করে, যারা ঘর বাঁধে না, যে মানুষটি মানুষের ধারে ধারে ভিক্ষা করতো, রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজতো, সে কখনো পাকা দালানের স্বপ্ন দেখতো না। সে স্বপ্ন দেখতো আমার যদি একটি দোচালা ঘর হতো, তাদের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে শেখ হাসিনা জমির মালিকানাসহ ইতোমধ্যে সাড়ে আট লাখ পাকা টিনশেড ঘর করে দিয়েছেন। এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার রাজনীতি। এখানেই আওয়ামী লীগ আর বিএনপির রাজনীতির পার্থক্য।

জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, খুনি জিয়াউর রহমান জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। খুনিদের সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে পদোন্নতি দিয়েছেন, পদায়ন করেছেন, নিরাপত্তা দিয়েছেন। তিনি সংবিধান ভূলুণ্ঠিত করেছেন। সংবিধান কাঁটাছেড়া করেছেন। পঞ্চম সংশোধনী করে হত্যাকারীদের বিচারের আওতার বাহিরে রেখেছেন। এভাবে তিনি আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত করেছেন। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, হত্যা করেছেন। তার সকল কর্মকাণ্ড ৪৮ বছর ধরে বিশ্লেষণ করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, খুনি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নেপথ্যের প্রধান কুশীলব। নেপথ্যের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারী।

তিনি আরও বলেন, খুনি জিয়া নিরপরাধ ও মুক্তিযোদ্ধা অনেক সেনা কর্মকর্তাকে ‘মার্শাল ল’ এর মাধ্যমে হত্যা করলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুরষ্কৃত করেছিলেন। আমরা জানি, জিয়াউর রহমান মার্শাল ল আদালতে কত নিরীহ, নিষ্পাপ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। সেই জিয়াউর রহমান মার্শাল ল এর মাধ্যমে বহু মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদেরকে হত্যা করেছে। নিরীহ সেনা কর্মকর্তাদেরকে হত্যা করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদেরকে মার্শাল ল’ এর আওতায় আনেন নাই। বরং খুনীদের বিভিন্নভাবে পুরষ্কৃত করা হয়েছিল।

সখিপুর থানা আওয়ামী লীগ ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. হুমায়ুন কবির মোল্যার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মানিক সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সিকদার। এসময় জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এমএ কাইউম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জিতু মিয়া বেপারী, আলী আকবর পাইক, সহ-কহিনুর সুলতানা দোলা, আনোয়ার হোসেন বালা, নাসির সরদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মানিক সরদার প্রমূখ।