ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত রাজনৈতিক ক্যান্সার: অ্যান্ড্রু ক্যুমো

নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ডেমোক্র্যাট অ্যান্ড্রু কুমো প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক ও জর্জিয়ার গ্রান্ড জুরির তদন্তকে ‘রাজনৈতিক ক্যান্সার’-এর অংশ হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি এই তদন্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করেছেন। ডব্লিউএবিসি ৭৭০-তে এক সাক্ষাৎকারে কুমো বলেন, আগামী সপ্তাহে ম্যানহাটনে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হতে পারে। তবে ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ (ডেমোক্র্যাট) কেনো ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এডাল্ট ফিল্ম স্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ প্রদানের মামলার তদন্তে এমন জোর দিচ্ছেন- তা তিনি বুঝতে পারছেন না। কুমো যুক্তি দেন, মামলাটি একটি সম্ভাব্য অপকর্মের উপর হওয়া উচিত। তবে এটি একটি রাজ্যের মামলার পরিবর্তে ফেডারেল মামলা হওয়া উচিত।

ট্রাম্পের সাথে কথিত সম্পর্কের বিষয়ে চুপ থাকার জন্য সাবেক অ্যাটর্নি মাইকেল কোহেন (রিপাবলিকান), ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার প্রদান করেন। কোহেন জানান, ট্রাম্পের নির্দেশে তিনি এই অর্থ প্রদান করেন এবং পরে তার এই অর্থ পরিশোধও করা হয়েছে। অর্থপ্রদানের কারণে একটি প্রচারাভিযানের আর্থিক বিধি লঙ্ঘনসহ ফেডারেল অভিযোগে ২০১৮ সালে দোষী সাব্যস্ত হন কোহেন। কিন্তু বিচার বিভাগ কোহেনের অভিযোগ সত্ত্বেও অর্থপ্রদানের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করতে অস্বীকার করে। অবশ্য ট্রাম্প কোহেনকে ওই অর্থ ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, ওই অর্থ প্রচারের তহবিলের সাথে সম্পর্কিত নয়। ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এবং ব্র্যাগ দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্কালে অর্থ প্রদানের বিষয়ে সাবেক ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সাইরাস ভ্যান্স জুনিয়র স্থানীয় তদন্ত শুরু করেন। কুমো বলেন, প্রচারাভিযানের আর্থিক বিধি লঙ্ঘনের মামলাটি হবে ফেডারেল মামলা। এই ধরণের মামলা অপকর্মের পরিবর্তে অপরাধী মামলা হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, প্রসিকিউটররা ‘পক্ষপাতমূলক’ মামলা করে মানুষের ‘নিন্দাবাদ’ নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, ‘একজন ডেমোক্র্যাটিক প্রসিকিউটর কেবল একজন রিপাবলিকানকে এবং একজন রিপাবলিকান প্রসিকিউটর কেবল একজন ডেমোক্র্যাটকে আক্রমণ করছেন আমি তা বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি এটি সবই রাজনৈতিক এবং আমি মনে করি এই দেশের মানুষ এটাই বলছে।’কুমো বলেন, ব্র্যাগ, নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস (ডেমোক্র্যাট) এবং ফুলটন কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ফানি উইলিস (ডেমোক্র্যাট) ট্রাম্পের পেছনে লেগেছেন তা কাকতালীয় ঘটনা- এটা তিনি বিশ্বাস করেন না। জেমস বহু বছর তদন্তের পরে ট্রাম্প সংস্থা থেকে সম্ভাব্য আর্থিক অপরাধের জন্য ট্রাম্প ও তার তিন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করছেন।

অন্যদিকে উইলিস ২০২০ সালে জর্জিয়ায় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার ট্রাম্পের কথিত প্রচেষ্টার তদন্ত করছেন। কুমো বলেন, ‘আমি মনে করি এটি নিন্দাবাদকে খাওয়াচ্ছে এবং এটিই এখন আমাদের রাজনৈতিক ক্যান্সার। লেটিশিয়া জেমসের নেতৃত্বে এক তদন্তে ১১ জন মহিলাকে যৌন হয়রানি করার প্রমাণ পাওয়ার পর কুমো ২০২১ সালে পদত্যাগ করেন। আরেকটি তদন্তে দেখা গেছে কুমোর প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে নার্সিং হোমে কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ শতাংশের মতো কম গণনা করেছে। তবে কুমো কাউকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। রাজ্যের পাঁচজন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নিও কুমোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে অস্বীকার করে জানান, তারা বিচার করার জন্য যথেষ্ট আইনি ভিত্তির কাছে পৌঁছাতে পারেননি। তদন্তকারীরাও নার্সিং হোম পরিস্থিতির জন্য কুমোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দায়ের না করার পথ বেছে নেন।

কুমোর একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, জেমসের প্রতিবেদনটি একটি ‘জালিয়াতি’। এতে উল্লেখ করা হয়, প্রসিকিউটররা উভয় তদন্ত নিয়েই কোনো মামলায় এগিয়ে যাননি। তারা বলেন, ‘সেখানে কখনো তা ছিল না কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত প্রচুর রাজনীতি ছিল।’