ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে একমাসেই বেড়েছে দ্বিগুণ পেঁয়াজের দাম

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার পৌরশহরের বৃহৎ বাজার কলেজ হাট।আজ বুধবার দুপুরের পর থেকে হাটে চলে জমজমাট কেনাবেচা।

রানীশংকৈল উপজেলার প্রায মানুষ অপেক্ষা করে থাকে নিকটবর্তী হাটে সওদা হিসেবে নানান রকমের সব্জী জাতীয় তরকারি কেনাকাটা করার জন্য। চাকরিজীবী ব্যবসায়ী ও নানান পেশার মানুষের ভীর দেখা যায় এ হাটে। এছাড়াও নির্বিঘ্নে নানান বয়সের মহিলারাও এ হাটে কেনাকাটা করে।

শহরে জমিনে কলেজ হাটে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য তরিতরকারির মধ্যে পেঁয়াজের বাজারে আগুন দাম। সপ্তাহখানেক এর ব্যবধানে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার অনেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীর দোকানে সাধারণ ক্রেতাদের দরদামে বাকবিতণ্ড করতে দেখা গেছে।

নুর ইসলাম নামে কলেজ হাটে আসা এক ক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই বাজারে গত সপ্তাহে ৫৫ টাকা দরে পেঁয়াজ ক্রয় করলেও আজ হাটে পেঁয়াজ নিতে এসে অবাক হচ্ছি। প্রতি কেজি পেয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এমন অবস্থা শুরু হলে কপালে দুঃখ ছাড়া কিছু নেই।

একই কথা বলেন, পৌর শহরের সাইকেল ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বেলেন, ‘ আজ পেঁয়াজ ৮০ টাকায় কিনেছি। বাজারে জিনিসপত্রের দাম এখন হাতের নাগালের বাইরে।

রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আকবর আলী জানান, গত বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও আজ অনেক বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। পেঁয়াজের এমন অবস্থা থাকলে মানুষকে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হবে।

কলেজ হাটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ আমাদের কি করার আছে, বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে সামান্য রেখেই ছেড়ে দিচ্ছি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাক সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। খোদ খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরাও কল্পনা করতে পারেনি কেন এই পেঁয়াজের দাম বাড়ন্ত।

খুচরা ব্যবসায়ী হোসেন কিছু দিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ৩৫ টাকা। পাইকারি হারে কিনে তিনি লাভ করেছেন কেজিতে ৫ টাকা। আজ লাভ তো দূরের কথা। তিনি নিজেই লোকসানের পথে হাঁটছেন। তিনি আরোও জানান, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে তিনি দেখেন, যে দামে কিনতে হবে তা কেজিতে বিক্রি করলে দাম পড়বে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
রমজান ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এখন হয়েছে কেজিতে ৭০ টাকা। বলতে গেলে ১ মাসে একেবারে দ্বিগুণ।

সচেতন মহল বলছেন, উৎপাদন ও মজুদ বিবেচনায় দেশে এ মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। কিন্তু কী কারণে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তা সরকারকে খতিয়ে দেখা দরকার।

নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পাইকারির সিন্ডিকেটে দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সামনে কোরবানির ঈদ। হয়ত এ মৌসুমকে কাজে লাগাতে চায় এই ব্যবসায়ীরা।

রানীশংকৈল কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, আমাদের উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। উপজেলায় এবছর ১৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০-৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়।