ঠাকুরগাঁওয়ে বাবা- মায়ের স্বপ্নপূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে

হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করে বাড়িতে বউ আনবেন ছেলে এমন আশা ছিল বাবা মায়ের। কয়েক বছর আগে হেলিকপ্টারে পুত্রবধু আনার একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে পিতার শখ জাগে তিনিও তার ছেলেকে বিয়ে দিয়ে হেলিকপ্টারে ছেলের বউ ঘরে আনবেন। সাধ থাকলেও সাধ্য হয়ে না ওঠার কারণে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে পিতা-মাতার।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর)বিকেলে হেলিকপ্টারে রাণীশংকৈল উপজেলার ভবানন্দপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ছেলের বউ নিয়ে আসেন ছেলে স্বপ্ন সামিউল্লাহ। শরিফ হাসানের ৪ সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান স্বপ্ন সামিউল্লাহ। পেশায় একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। স্বপ্ন সামিউল্লাহ সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থায় ভিডিও কলে সামাজিক নীতি মেনে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করা মুমতারিন নাজনীন সুইটির সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।

দেশে এসে বাবা মায়ের সেই শখ পূরণে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথমে ঢাকা থেকে পাবনা শশুরবাড়ী সেখান থেকে নিজ বাড়িতে হেলিকপ্টারে চড়ে আসেন নবদম্পত্তি। এ সময় আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ জড় হয় এ দৃশ্য দেখতে।

স্থানীয় দোকানদার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্রামের মানুষ এত কাছে থেকে কোনদিন হেলিকপ্টার দেখতে পায়নি। স্বপ্ন সামিউল্লাহ বিবাহ উপলক্ষে হেলিকপ্টার গ্রামে আসায় গ্রামবাসী আনন্দিত ও গর্বিত।’ বরের বড় বোন সুমি বলেন, ‘তার ছোট ভাই বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য হেলিকপ্টার করে বউ নিয়ে গ্রামে এসে এতে একদিকে তার ছোট ভাই বাবা মায়ের স্বপ্নটা পূরণ করেছে অন্যদিকে গ্রামবাসীও হেলিকপ্টার দেখে আনন্দ পেয়েছে।’

বনবধূ মুমতারিন নাজনীন সুইটি বলেন, ‘তার স্বামী আজ বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে। পাশাপাশি অনেক ভালো লাগছে নতুন এক অভিজ্ঞতায়। গ্রামবাসী আমাদের বরণ করে নেয়াটাও অনেক উপভোগ করেছি আমরা।’

স্বপ্ন সামিউল্লাহ বলেন, ‘আমরা ৪ ভাই বোন। ভাই বোনের মধ্যে আমি তৃতীয়। ছেলে হিসেবে বাবা মায়ের শখ পূরণ করতে হলো। তাই ঘণ্টায় ৮০ হাজার টাকা হিসেবে হেলিকপ্টারটি ভাড়া করে স্ত্রীকে ঘরে এনে বাবা মায়ের শখ পূরণ করতে পেরেছি। পিতা শরিফ হাসান বলেন, ‘এক সময় পরিবারের মাঝে আমরা আলোচনা করতাম এক ছেলের বউ হেলিকপ্টারে বাড়িতে আনবো। সে কথা মনে রেখে ছেলে বাড়িতে হেলিকপ্টারে বউ এনেছে। মনে খুব শান্তি পেয়েছি। আর কোন শখ বাকি নাই।