ঠাকুরগাঁওয়ের কৃতি নারী খেলোয়াড় মৌয়ের খবর রাখেনি কেউ

একসময় জেলার বিভিন্ন মাঠ দাপিয়ে বেড়াতো কৃতী নারী খেলোয়াড় মৌ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ থাকায় মাঠে যেতে পারছেন না। বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করতে পারছেন না। তার পুরো নাম জাকিয়া আফরোজ মৌ (১৬)। সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহসিন আলী ও তাজমিরা আক্তারের বড় মেয়ে। সালন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের হয়ে রাগবি, বাস্কটবলসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়মত খেলেছিলেন মৌ। ২০২০ সালে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসে অংশগ্রহন করেছেন তিনি। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার পরেই বদলে গেছে তার জীবন, খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় গত দেড় বছর ধরে অসুস্থ থকালেও কেউ তার খবর রাখেনি।

সদর উপজেলার সালন্দর মন্ডলপাড়া গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। মৌ বলেন, আমি বদ্যালয়ের হয়ে অনেক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেছি। রাগবি, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহন করে শতাধিক ম্যাডেল ও সনদপত্র পেয়েছি। যখন বিদ্যালয়ের খেলাধুলা হতো তখন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নিয়মিত খোজ-খবর রাখতো। কিন্তু গত দেড় বছর থেকে গুরুতর অসুস্থ থাকলেও কেউ খবর নেয়নি। আমার দীঘদিন ধরে পেট ব্যাথা, খেলেই বমি হয় সাথে রক্ত আসে। আমি সুস্থ হয়ে পুনরায় মাঠে ফিরতে চাই; কিন্তু জানিনা পারবো কিনা।

মৌয়ের মা তাজমিরা আক্তার বলেন, গত কয়েকদিন আগে মৌ গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে ৪ দিন ধরে ভর্তি থাকার পর চিকিৎসকেরা ঢাকায় রেফার্ড করে দিলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসি। গত দেড় বছর ধরে এ সমস্যা। এর আগে রংপুরে ৭ দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা করিয়ে লাভ হয়নি। রাতে সে ঘুমাতে পারে না। অস্থির অস্থির ভাব থাকায় প্রতিদিন বমি, ঘুম, পেট ব্যাথার ইনজেকশন দিলে কিছুটা ঘুমায় সে। বিকেএসপি’তে ২ বার ডাক পেলেও অসুস্থতার কারনে যেতে পারেনি মৌ। প্রমিলা, হকি, আর্চারী এগুলোতে ডাক পেয়েছিল। বাস্কেটবলও চান্স পেয়েছিল। অসুস্থতার কারনে আর বিকেএসপি’তে ট্রায়ালে যাওয়া হয়নি। ওর পাসপোর্ট করা হয়েছে, বিভিন্ন সমস্যার কারনে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু বলেন, এর আগে তার চিকিৎসায় সহায়তা করা হয়েছিল। ২/১ দিনের মধ্যে লোক পাঠিয়ে তার শারীরীক অবস্থার খোজ-খবর নেওয়া হবে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার কথা শুনেছিলাম; জানিনা ওর পরিবার কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানলাম মৌয়ের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হলে তার চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।