ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে মারপিটের ঘটনায় বৃদ্ধা প্রমিলার মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও কেউটান এলাকায় ধানের গাড়ি রাস্তায় পাড়াপাড়ের ঘটনায় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ঝগড়া ও পারপিটের ঘটনায় প্রমিলা রাণী (৫০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। প্রমিলা কেউটান গ্রামের তিলক রায়ের স্ত্রী।
জানা গেছে গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর বিকালে মৃতের বাড়ি পাশে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে নিহতের পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার ৪ নভেম্বর বিকালে কেউটান গ্রামে ধানের গাড়ি রাস্তা পারাপারে একই গ্রামের মনসিংহের রাস্তায় রাখা বাঁশের খুটি ভেঙ্গে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিলক রায়ের পরিবারের সাথে মনসিংহ ওরফে কাচালুর পরিবারের সাথে ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে মারপিটের ঘটনা ঘটে।
এ সময় কাচালুর ভাই পরেশ বাঁশদিয়ে তিলকের ছেলেকে বেধরক পেটাতে শুরু করে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে তার মা প্রমিলা এগিয়ে এলে, মানসিংহের স্ত্রী ও তার দুই বৌমা প্রমিলার মাথার চুল ধরে এলোপাথাড়ি মারতে মারতে, মাটিতে ফেলে সজোড়ে অনেক লাথি মারে। এতে অসুস্থবস্থায় প্রমিলাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কিছুটা সুস্থ হলেও রাতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রমিলা। হাসপাতালে নিতে যানবাহন না পাওয়ায় সকালে নিয়ে যাবে বলে পরিবারের লোকজন সারারাত প্রমিলাকে তেল গরম করে মালিশ এবং কিছু ঔষধ খাওয়ায়ে সেবা চালিয়ে যায়।
রাতভর বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা করেও বৃদ্ধা প্রমিলার কোন শারীরিক উন্নতি না হওয়ায় ভোরে দিকে তিনি মারা যান।
থানার এ এস আই নুর আলম জানান, ওই রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে । এসময় তিলকের স্ত্রী প্রমিলা রাণী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে তাকে চিকিৎসা করেন তার বাড়ির লোকজন। রাতভর বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা করেও প্রমিলার কোন উন্নতি না হওয়ায় ভোরে সে মারা যায়।
এ নিয়ে প্রমিলার স্বামী তিলক রায় বাদী হয়ে গতকাল শনিবার ৫ নভেম্বর রাতে মনসিংহ (কাচালু) ও তার ভাই পরেশ রায়সহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানা পুলিশ অভিযুক্ত দুই জনকে গ্রেফতার করে পরদিন রবিবার ৬ নভেম্বর জেলা জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী তিলক চন্দ্র বলেন, মনসিংহ (কাচালু) সহ তার লোকজন আমার ছেলে ও স্ত্রীকে মাথার চুল ধরে মাটিতে ফেলে লাথিসহ বেধড়ক পিটিয়েছে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পরে আমরা সবাই রক্ষা পাই। মারপিটের কারণেই আমার স্ত্রী প্রমিলার মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে ঘটনাকে কেন্দ্র করে হোসেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি গত শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ইউপি কার্যালয়ে বিচারের জন্য শালিস ডেকেছিল।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি মুঠোফোনে বলেন, শনিবার দুপুর ১২টায় ইউপি কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে সালিশের জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ভোর রাতে প্রমিলার মৃত্যু হওয়ায় শালিস করা সম্ভব হয়নি।
থানা অফিসার ইনচার্জ এসএম জাহিদ ইকবাল বলেন, এ ঘটনায় ৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। ২ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন