ঠাকুরগাঁওয়ে আগাম সবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকেরা
হরেক রকম শীতকালীন আগাম সবজির সমারহ ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন হাট-বাজারে। আর স্থানীয়দের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এসব সবজি যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। আর ভোক্তারা পাচ্ছেন শীতের বিভিন্ন ধরণের আগাম সবজি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৮৯৫ হেক্টের জমি। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬৩৭ হেক্টর জমিতে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, মাঠে-ঘাটে আগাম জাতের শীতকালীন সবজির ব্যাপক চাষ। আগাম সবজির মধ্যে বাজারজাত করা হচ্ছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, লাউ, করল্লা, পেঁপে, বোরবটি, সীমসহ বিভিন্ন জাতের শাক সবজি।
এসব সবজির মান ভালো হওয়ায় পাইকারি দরে কিনে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গতবার এমন সময় এক থেকে দুইটা করে সবজির গাড়ি লোড হতো আর এবার আগাম সবজির চাষ ও ফলন বেশি হওয়ায় দৈনিক ৪-৫টা করে সবজির গাড়ি লোড করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। এতে যেমন লাভবান হচ্ছেন কৃষক তেমনি তারাও বেশ লাভবান হচ্ছেন বলে জানান সবজি ব্যবসায়ী ওহায়েদ মুরাদ ও সুজন মিয়া।
বর্তমান সবজির যে বাজার দর, এমন দাম থাকলে লাভবান হবেন বলে জানান কৃষক হানিফ। তিনি বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছি। এতে প্রতি সপ্তাহে ১০-১৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রয় করছি। আশা করছি মৌসুম শেষে দেড় বিঘার বেগুনে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হবে। সদর উপজেলার নারগুন কহরপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র সবজি চাষী আব্দুল মালেক চাষ করেছেন বিভিন্ন প্রকার সবজি। এর মধ্যে পালং শাক তুলে বাজারজাত করছেন তিনি। তিনি জানান, পালং শাক শুধু ৭ কাঠা জমিতে করেছি। খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। ৩ কাঠা জমির শাক বিক্রি করেছি সাড়ে ৬ হাজার টাকা। আরও বাকি যেটা শাক আছে সেটা বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব। আর যদি এর থেকে দাম বেশি হয় তাহলে আশা করছি ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রয় হবে।
কৃষকদের কাছে পাইকারি দরে ভালো মানের ফুলকপি ৩৫ টাকা, করল্লা ৪০, বেগুন ২২-২৫, লাউ প্রতি পিচ ২৪, মুলা ৭-৮ টাকা কেজি দরে কিনছেন বলে জানান সবজি ব্যবসায়ীরা মনির হোসেন।
তবে এবার মূলা চাষ করে খরচের তুলনায় দাম না পেয়ে হতাশ মূলা চাষীরা। চাষী আল-আমীন বলেন, এবার ফুলকপি, লাউসহ অন্যান্য সবজির দাম ভালো হলেও মূলার তেমন দাম নেই। মজুর দিয়ে জমি থেকে মূলা তুলতে মূলা বিক্রয় করে সেই মজুরের টাকায় হয় না। এখনো আমার ৫ একর জমির মূলা বিক্রি করতে পারিনি। এতে আমরা মূলা চাষীরা খুব হতাশায় আছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, সবজি চাষে সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আগাম সবজি চাষে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন বলে আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। আশা করি আবহাওয়া ভালো থাকায় সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন