কক্ষে তালা

ঢাবি’র অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ছাত্রলীগের

রাজধানীর শাহবাগ থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান শাহিন বাদী হয়ে বুধবার রাত ৮টার দিকে এ অভিযোগ করেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এটি এখন জিডি আকারে দায়ের করা হবে। পরে বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে পাঠানো হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী এটা মামলা হিসেবে রুজু হতে পারে।’

এর আগে মঙ্গলবার আসিফ নজরুল নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি বলেন ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে’।

এ বিষয়ে ড. আসিফ নজরুল একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার স্ট্যাটাসটি ন্যূনতম মত প্রকাশের স্বাধীনতা। এতে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয়নি। এই স্ট্যাটাসে কোনো অপরাধ হয়নি। আমি মনে করি সাইবার টিম সেটি বিবেচনা করবেন।’

ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান শাহিনের বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়ায়। তিনি কলারোয়া উপজেলার ৫নং কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেনের বড় ছেলে।

ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ হাসান শাহিনের দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. আসিফ নজরুল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে একটি স্ট্যাটাস দেয় যাহা ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে’। আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাসটি রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি, সুনাম ও দেশের আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে। তার স্ট্যাটাসটি শুধু দেশের ভাবমূর্তিই নয়, বরং আক্রমনাত্মক তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াইয়া আইন শৃঙ্খলার অবনতি করিয়া সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ করিতে ও দেশের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করার মাধ্যমে শান্তি বিনষ্ট করিয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার সহায়ক।’

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি শেষে বুধবার দুপুর দেড়টায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দেয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারাও তালা মারা কঙ্গে তালা দেয়।

আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দিয়েছে ছাত্রলীগ। এ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তার কক্ষের দরজায় ও দেওয়ালে পোস্টারও সাঁটানো হয়।

সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি শেষে বুধবার দুপুর দেড়টায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দেয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারাও তালা মারা কঙ্গে তালা দেয়।

এর আগে মঙ্গলবার আসিফ নজরুল নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি বলেন ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে’।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আসিফ নজরুলের তালাবদ্ধ কক্ষে আরও তিনটি তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ার খান জয় শহীদ মিনারের সমাবেশে বলেন, আমরা আপনাকে আবারও বলছি, আপনার যদি পাকিস্তানে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, পাসপোর্ট করে পাকিস্তান চলে যান। বাংলাদেশে থেকে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করার সুযোগ অন্তত ছাত্রলীগ দেবে না।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আসিফ নজরুল বিভিন্ন সময় জামাত-শিবির ও জঙ্গিবাদীদের উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে থাকেন।

তিনি বলেন, রাজু ভাস্কর্যের সামনে উনি বলেছেন- শিবির হলে কী হয়েছে? শিবির হলে কি তাকে মারতে হবে? আমরা বলে দিতে চাই, শিবির হলেই তাকে মারতে হবে।

আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আরেক সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, তালেবানের সমর্থনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আসিফ নজরুল প্রমাণ করেছেন, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এ বিষয়ে আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে বলেন, আমি বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে। এটার মধ্যে কী দোষের আছে, আমি বুঝতে পারছি না। আমি খুবই হতবাক।

আরেকটি ফেসবুক পোস্টে আগের পোস্টের ব্যাখ্যা আসিফ নজরুলের

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বুধবার সন্ধ্যায় আরেকটি ফেসবুক পোস্টে মঙ্গলবারের পোস্টের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন- ‘আমার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো মহল থেকে যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হচ্ছে আমি তাতে বিস্মিত ও মর্মাহত। আমার স্ট্যাটাসে কাউকে উল্লেখ করে কিছু বলা হয়নি। এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচনে বিজয়ী সরকার দৃঢ়ভাবে দূনীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে এধরনের মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়। এমন একটা কথা সম্ভাবনা হিসেবে আমার স্ট্যাটাসে বলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশার সাথে উগ্রবাদ বা মৌলবাদকে উৎসাহিত করার কোন সম্পক নেই। উগ্রবাদী ও মৌলবাদীরা বরং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হয়। আশা করি আমার বক্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে।’