তেঁতুলিয়া বিপন্ন গন্ধগোকুল উদ্ধার, বনবিভাগে হস্তান্তর
পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলায় বিপন্ন প্রজাতির তিনটি গন্ধগোকুল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার (২০ মে ২০২১) প্রাণী তিনটিকে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন উপজেলার ৭নং দেবনগড় ইউপিথর ব্রহ্মতল গ্রামের উদ্ধারকারী বিশিষ্ট পাথর ব্যবসায়ী আলহাজ্ব সাত্তার আলী ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো: নুর আলম।
জানাযায়, বুধবার (১৯ মে) বিকেলে দেবগনড় ইউনিয়নের ব্রহ্মতল এলাকার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুর আলমের মরিচ ক্ষেতে মরিচ তুলছিলেন কয়েকজন নারী। মরিচ তোলার এক পর্যায়ে ক্ষেতের মাঝখানে একটি গর্তে গন্ধগোকুল দেখতে পান তারা। মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে মা গন্ধগোকুলটি একটি ছানা নিয়ে পালিয়ে যায়। গর্তে থাকা বাকি তিনটি ছানা খাদ্য সংকটে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিল। পরে ছাত্রলীগ নেতা নুর আলম ছানা তিনটিকে উদ্ধার করে বাড়ি এনে তাদের খাবার দেন। ছানা তিনটির গায়ের রঙ ধূসরের মাঝে কালো দাগটানা। এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গন্ধগোকুলের ছানা দেখতে ভিড় জমায় স্থানীয়রা। অতঃপর নুর আলম ছানা তিনটি খাদ্য সংকটে হয়তো অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিল, নড়াচড়া করতে পারছিল না। তাই তিনি বাড়িতে এনে খাবার দেই। পরে তিনি তার ফেসবুক ওয়ালে উদ্ধার হওয়া গন্ধগোকুলের বিষয়ে লেখালেখি করলে সে খবর দিনাজপুর বনবিভাগ পর্যন্ত পৌঁছায়।
গন্ধগোকুল সম্পর্কে বন্যপ্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিপন্ন গন্ধগোকুল নিশাচর প্রাণী। খাটাশের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে এরাই মানুষের কাছাকাছি থাকে। মূলত ফলখেকো হলেও ছোট প্রাণী এবং তাল-খেজুরের রস খায়। এরা ইঁদুর ও ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের উপকার করে থাকে। বর্তমানে এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে সংরক্ষিত।
গন্ধগোকুল উদ্ধারকারীর বাসায় বন্যপ্রাণী আলোকচিত্র ও সংরক্ষক ফিরোজ আল সাবাহ’র পাঠানো প্রকৃতিপ্রেমী ও ওয়াল লাইভ এক্টিভিস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ তিনজনের মাধ্যমে পঞ্চগড় বনবিভাগে ছানা তিনটি হস্তান্তর করা হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুল হক জানান, উনাকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। তিনি বিলুপ্তি এই গন্ধগোকুল প্রাণীর বাচ্চা তিনটির সুস্থতার জন্য বনবিভাগে হস্থান্তর করতে বলেন।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: বশিরুল আল-মামুন বলেন, গন্ধগোকুলের বাচ্চা তিনটি তাদের হেফাজতে রয়েছে। তিনি চেষ্টা করছেন ছেড়ে যাওয়া মা গন্ধগোকুল ও তার একটি বাচ্চাকে উদ্ধার করবে। তিনি বলেন, স্থানীয়রা জানিয়েছেন মা গন্ধগোকুলটি সন্ধ্যায় তার বাচ্চার খোঁজে সেই ক্ষেত বাড়িতে আসেন। আমরা চেষ্টা করব বাচ্চাদের সেই স্থানে ছেড়ে দিয়ে উদ্ধারকৃতদের জীবন বাঁচানোর। যদি তা না হয় তাহলে উদ্ধারকৃত গন্ধগোকুলদের বনবিভাগের সু-ব্যস্থায় রাখবেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন