দান নয়, যে কারণে সমাহিত করা হবে জাফরুল্লাহর মরদেহ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মরণোত্তর দেহ দানের কথা বলে গেলেও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে পরিবার। কারণ জাফরুল্লাহর সম্মানেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ বা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কেউই তাঁর দেহে ছুরি চালাতে রাজি হয়নি। মূলত এই কারণেই মরদেহ সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে বারিশ চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজার আগে ছেলে বারিশ চৌধুরী এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, আগামীকাল শুক্রবার সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাকে দাফন করা হবে।

বারিশ চৌধুরী বলেন, ‘বাবার ইচ্ছা ছিল তার দেহ দান করার। আমরা তার ইচ্ছা অনুযায়ী চেয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেল বা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দেহ দান করব। কিন্তু আমরা এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে শুনেছি, বাবার সম্মানে কেউ তার লাশে ছুরি চালাতে রাজি নন। এটা একটা সম্মানের থেকেই এই জিনিসটা বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খুব চেয়েছিলাম কারণ, সে সারা জীবন একটা উদারহণ হিসেবে হতে চেয়েছিল। কিন্তু একটা সম্মানের জায়গা থেকে যখন বলা হচ্ছে কেউ হাত দিতে রাজি না, আমাদের তো আর কিছু করার নেই। তাই আমরা তাকে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দাফন করব আর শেষ সম্মান জানাব।’

এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে বারডেম হাসপাতালের হিমাগার থেকে ফ্রিজিং ভ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়ার পর সবার আগে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার দেয়া হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টায় ধানমন্ডির তারই হাতে গড়ে তোলা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৮২ বছর বয়সী এ জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, যারা এখন জানাজা পড়তে পারেননি তারা বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দ্বিতীয় জানাজা পড়তে পারবেন।

এর আগে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে বারডেম হাসপাতালের হিমাগার থেকে ফ্রিজিং ভ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়ার পর সবার আগে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী।

পরে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতারা, রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল, ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় তার মরদেহ নেয়া হবে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং বাদ জুমা সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। সবশেষে তাকে সেখানেই দাফন করা হবে।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত সোয়া ১১টার দিকে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ। এ তথ্য নিশ্চিত করেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফী।

গত ৫ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ডা. জাফরুল্লাহকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

সোমবার (১০ এপ্রিল) শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন।

৮২ বছর বয়সী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনার পর কিডনি সমস্যার পাশাপাশি তার লিভারের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া তিনি অপুষ্টিজনিত রোগসহ গুরুতর সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন।