দাপুটে রাজনীতিবিদ হলেও কোনো দলে ছিলেন না ডা. জাফরুল্লাহ
নিজের স্বার্থচরিতার্থ করতে রাজনৈতিক দলগুলোতে নেতাদের একটাই লক্ষ্য থাকে, সেটা হলো— একটি কাঙ্ক্ষিত পদ। ‘দলের কাঙ্ক্ষিত পদটি না পেলে রাজনীতির সলিল সমাধি ঘটবে।’ অথচ এসব চিন্তার বিরুদ্ধে রাজনীতিতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করে গেলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
কোনো দলে যুক্ত না হলেও রাজনীতি সচেতন এই ব্যক্তি বলতেন— ‘আমি মানুষের রাজনীতি করি।’
জনগণের জন্য কাজ করতে গিয়ে দেশের বহু রাজনৈতিক দল এবং প্রত্যেক সরকারের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রেখেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে তিনি রাজনীতিতে সোচ্চার থাকলেও কোনো দলীয় পদপদবি ছিল না তার।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তনে ভূমিকা থাকলেও সরকারের অংশ কখনো হননি ডা. জাফরুল্লাহ। স্বাধীনচেতা প্রতিবাদী মানুষ হিসেবেই তিনি সর্বাধিক পরিচিত। সাধারণ মানুষের স্বার্থে কথা বলতে গিয়ে তিনি কখনো সরকারের সমালোচনা করেছেন, আবার কখনো সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। একই আচরণ বিরোধী দলের প্রতিও ছিল তার।
বঙ্গবন্ধুর সংস্পর্শ পাওয়া জাফরুল্লাহ রাজনৈতিক অঙ্গনেও নানা ভূমিকা রেখে চলছিলেন। তবে এই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিতি গড়ে উঠেছিল তার।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগবিরোধী দলগুলোকে এক মঞ্চে এনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে তৎকালীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকলেও কোনো পদে ছিলেন না জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদের মতো রাজনৈতিক দল গঠনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা থাকলেও তিনি এসব দলের কোনো পদপদবি গ্রহণ করেননি। তবে ভাসানী অনুসারী পরিষদের সহসভাপতি এবং পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে কিছু দিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ওই সময় ভাসানী পরিষদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল না। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কর্মকাণ্ড মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।
জনমনে ধারণা— ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিশেষ কোনো একটি দলের প্রতি দুর্বলতা ছিল। বাস্তবতা হচ্ছে, তিনি বঙ্গবন্ধুর সরকার, জিয়াউর রহমানের সরকার, হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের সরকার বা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি যে দলই সরকার গঠন করেছে প্রত্যেক সরকার এবং বহু রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সুসম্পর্ক স্পষ্ট ছিল।
মা, মাটি ও মানুষ; জীবনে এই তিন নীতি নিয়েই চলেছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আর তাই দুটি কিডনি নষ্ট হওয়ার পরও নানা সংকটে সমাধান খুঁজতে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন