দিয়াবাড়ি থেকে পল্লবী পর্যন্ত চললো মেট্রোরেল

আগামী রোববার (২৯ আগস্ট) থেকে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের ওপর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হচ্ছে। এর আগে প্রস্তুতি হিসেবে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকাল ছয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মেট্রোরেলের উড়াল রেলপথের দিয়াবাড়ি-পল্লবী অংশে একটি মেট্রোট্রেন পরিচালনা করা হয়েছে।

মেট্রোরেল প্রজেক্ট ম্যানেজার (সিপি-৮) এবিএম আরিফুর রহমান বলেন, প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত উত্তরা দিয়াবাড়ি ডিপো থেকে পল্লবী স্টেশন পর্যন্ত নিরাপদে মেট্রোরেল চলেছে। কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।

তিনি বলেন, মেট্রোরেলের উড়ালপথ কংক্রিটের দেয়ালবেষ্টিত। এ কারণে পথচারীরা মেট্রোরেল চলাচল দেখতে পাননি। তবে সংশ্লিষ্ট সড়কের পাশে উঁচু ভবন থেকে অনেকে এই ট্রেন চলাচল দেখতে পেয়েছেন।

প্রকল্পের সমন্বয়কারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎচালিত এ ট্রেনটি খুব ধীরে ধীরে চালানো হয় এবং রেলপথের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করা হয়‌।

ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, ভায়াডাক্টের ওপরে ট্রেন পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুতি চলছে। আগামী রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে ভায়াডাক্টের ওপরে মেট্রোরেলের ট্রেন পরিচালনার জন্য যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতেই প্রস্তুতি চলছে। শনিবারের মধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হবে বলে আশা করছি।

জানা গেছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৮.৪৯ শতাংশ। ২০.১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৬.৫৬৬ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের ইরেকশন শেষ হয়েছে। ১৭টি মেট্রো রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ চলছে। দিয়াবাড়িতে ডিপোর ভেতরে রেলপথ স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে বৈদ্যুতিক ওয়্যারিংয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

ভায়াডাক্টের ওপরে মূল রেলপথে ১৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপন করা হয়েছে। ১৫ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে চারটি মেট্রো ট্রেনসেট ঢাকার উত্তরার ডিপোতে এসে পৌঁছেছে। এগুলোর ১৯ ধরনের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ট্রেন চালানো হবে বিদ্যুতের মাধ্যমে। বর্তমানে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে এটি মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত নির্মাণের জন্য কাজ চলছে। এটি পরে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে।

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁওয়ের মধ্যে মেট্রো রেলপথের জন্য নির্মিত হচ্ছে নয়টি রেলস্টেশন। তার মধ্যে কমপক্ষে পাঁচটি রেলস্টেশনের মধ্যে রেলপথের ভায়াডাক্টের ওপর ট্রেন পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যেও এই প্রস্তুতি চলছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, করোনা মোকাবিলা করেই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে হচ্ছে। আমরা ভায়াডাক্টের ওপর মেট্রোট্রেন পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ডিএমটিসিএলের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরা-কমলাপুর মেট্রোরেল প্রকল্পে প্রায় সাত হাজার বিদেশি কাজ করছেন। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে যুক্ত ৩২১ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ যাবত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮৬ জন।