দীর্ঘদিন কৃত্রিম চুল পড়ে থাকায় মাথায় থিকথিকে পোকা, তারপর…

দীঘল কালো চুল রমণীয় শোভার অলংকার হলেও ঘন চুলের আবেদন কিংবা প্রয়োজনীয়তা পুরুষদের নিকট কম নয় মোটেই। চুলের আবেদন ও প্রয়োজনীয়তা তারাও হাড়ে হাড়ে টের পান যখন মাথার ওপর দৃশ্যমান হয় আস্ত ফাঁকা ময়দান তথা আবির্ভাব হয় টাকের। কেননা এই সমস্যাই হীনমন্যতায় ভোগেন অনেকেই। তাই নতুন চুল গজাতে অনেকেই অনেক পন্থা নেন। সস্তা বিজ্ঞাপন দেখে বাজার থেকে কিনে আনেন নানা ধরনের ওষুধ, জরিবুটি। তো কেউ আবার টাক ঢাকতে কৃত্রিম চুলের আশ্রয় নেন।

অনেকের মতে, মাথার চুল থাকলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। স্বল্প বয়সে অল্প চুল নিয়ে হতাশ অনেকেই। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে গিয়ে এমনই কৃত্রিম চুলের আড়ালে টাক ঢাকেন। তবে তাতে যে কত বড় সর্বনাশ নেমে আসতে পারে তা বোধহয় কল্পনাও করা যায় না।

টানা কৃত্রিম চুল ব্যবহার করে মর্মান্তিক পরিণতি হল সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির। সামান্য একটা কৃত্রিম চুল যে তার এমন সর্বনাশ করে ছাড়বে, তা হয়তো তিনি নিজেও ভাবেননি।

প্রায় বছর আগের কথা। নানা ধরনের কেমিক্যাল-মিশ্রিত শ্যাম্পু ব্যবহার করে অল্প বয়সেই মাথার চুলকে বিদায় জানিয়েছিলেন ভারতের কলকাতার বাসিন্দা সব্যসাচী। কিন্তু চুলের সঙ্গে একটু একটু করে কমতে শুরু করে আত্মবিশ্বাসও। বন্ধু, সহকর্মীদের টিটকিরি-ঠাট্টা আর যেন সহ্য হচ্ছিল না। তাই ঠিক করে ফেলেন, কৃত্রিম চুল লাগিয়ে সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলবেন। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। তবে এ কৃত্রিম চুল যেমন তেমনভাবে খোলা বা পরা যায় না। রীতিমতো হেয়ার সেন্টারে গিয়ে আঠা দিয়ে লাগাতে হয়। যাতে এক ঝলকে কেউ ধরতেই না পারে যে এই চুল আসল নয়। মাসে একবার কী দু’বার কৃত্রিম চুল খুলে শ্যাম্পু করে ফের পরে ফেলতেন। এইভাবেই দীর্ঘ আট বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের ওই কর্মী। কিন্তু গত তিন চার মাসেই ঘটে যত বিপত্তি।

সব্যসাচী জানান, গত তিন-চার মাস ধরে খুব মাথা চুলকাচ্ছিল। পরে দেখেন কৃত্রিম চুলে উকুন জাতীয় পোকা বাসা বেঁধেছে এবং ব্যাপকভাবে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকী বাইরেও বেরিয়ে আসছে। শ্যাম্পু করে ফের সেই কৃত্রিম চুলই মাথায় চাপান। তাতেও লাভ হয়নি। ঘুরেফিরে সেই কৃত্রিম চুলেই সংসার পাতে পোকারা। আর গত সপ্তাহে যখন তা খুলেন, তখন আঁতকে উঠলেন সব্যসাচীর পরিবারের লোকেরা। লাখ লাখ পোকা বেরিয়ে আসছে। গোটা স্কাল্পে লালচে গোল গোল ছোপ পড়ে গেছে। আর ভীষণ চুলকানি হচ্ছে।

চিকিৎসক জানান, কৃত্রিম চুলে বাসা বাঁধা পোকা আর আঠা থেকে গোটা মাথায় ইনফেকশন হয়ে গেছে। যে কারণে কৃত্রিম চুল পরতে সম্পূর্ণ নিষেধ করে দেন চিকিৎসক।