দুই প্রধান মন্ত্রীর প্রতি আহবান: নদী বাঁচানোর পানি চুক্তি করুন
বাংলাদেশ-ভারত দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের প্রধানমন্ত্রীগনের আসন্ন বৈঠকের প্রেক্ষাপটে ১৬ মার্চ দিল্লীতে অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৬ মার্চ বংগবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি উদযাপনে যোগ দেবার জন্য ঢাকা আসছেন। বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতীম মানুষ আশা করে এই সফরের সময় তাদের বাঁচা-মরার প্রশ্ন যৌথ নদী-পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে অগ্রগতি হবে।
পরিবেশ ও পানি-অধিকার পর্যবেক্ষণ গ্রুপ আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করে যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত নদীগুলোকে উৎস থেকে সাগর পর্যন্ত জীবিত রেখে অববাহিকা ভিত্তিক ব্যবস্থাপনার জন্য পারষ্পরিক বন্ধুত্বের আলোকে উভয়পক্ষ কার্যকর কিছু করবে।
বাংলাদেশের উৎপত্তি নদী থেকে। পৃথিবীর বৃহুত্তম বদ্বীপ এই দেশের ভেতরে প্রবাহিত ৫৭টি নদীর মধ্যে ৫৪টিই ভারত হয়ে এসেছে। টেকসই নদী-ব্যবস্থাপনার অভাবে উজানে যথেচ্ছ পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৩০টির অধিক নদী ইতোমধ্যে মরে গেছে। সীমান্তে পানি-বন্টনের ভ্রান্ত নীতিভিত্তিক গঙ্গা পানি চুক্তি বাংলাদেশের প্রত্যাশিত কাজে আসছে না। তিস্তার পুরো শুষ্ককালীন প্রবাহ গজলডোবা ব্যারেজের মাধ্যমে প্রত্যাহারের ফলে এ নদীর বাংলাদেশ অংশ প্রতিবছর শুকিয়ে যাচ্ছে। অথচ ভরা মৌসূমে গঙ্গা ও তিস্তার বন্যায় ভাসছে এদেশের মানুষ।
আইএফসি মনে করে বাংলাদেশে নদীগুলোর ভাটির অংশ পানি প্রত্যাহারের ফলে মরে গেলে এই প্রাকৃতিক প্রবাহগুলোর উজানের অংশও মরে যেতে বাধ্য। প্রাকৃতিক প্লাবনভূমি দিয়ে প্রবাহিত হলেই নদী জীবিত থাকে, কারণ শুকনো মওসূমে প্লাবনভুমির ভূগর্ভস্থ পানি নদীকে জীবিত রাখে। অন্যত্র শুকনো মাটি শুধু নদীর পানি চুসে নেয়। একারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৫০০০-এর বেশী বাঁধ ভেঙ্গে নদীর প্রবাহ পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সম্প্রতি ষ্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার ইনষ্টিটিউটের নেতৃত্বে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত এক জরীপে দেখা গেছে উৎস থেকে সাগর পর্যন্ত (S2S) ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নদীর তীরবর্তি অঞ্চলের সমন্বিত উন্নয়ন এবং দূষণ নিরসন করা সম্ভব।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আইএফসি, নিউ ইয়র্ক-এর চেয়ারম্যান, আতিকুর রহমান সালু, মহাসচিব, সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ড এস আই খান, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারী এবং আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন