দুদকের সক্ষমতার অভাব নিয়ে চেয়ারম্যানের আক্ষেপ

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের হাত অনেক লম্বা হলেও সংস্থাটির সক্ষমতার অভাব রয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘দুদকের সদিচ্ছা আছে, কিন্তু আমাদের সক্ষমতার অভাব রয়েছে। এ কারণে আমাদের কাজে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে টিআইবি এবং দুদকের সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।

দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আরও বেগবান ও গতিশীল করতে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে দুদক ও টিআইবি ২০১৫ সালের ২৫ মে দুই বছর মেয়াদী সমোঝতা স্মারক সই করে। এই সমঝোতা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই পক্ষ।

সমোঝোতা স্মারক সই শেষে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিদেশে কালো টাকা পাচার, ব্যবসার নামে অর্থপাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, এসব বিষয়ে দুদক শক্তভাবে হস্তক্ষেপ করবে।’ তিনি বলেন, ‘দক্ষ জনবল না থাকলে ১০টি টিআইবির পক্ষেও দুর্নীতি দমন করা সম্ভব হবে না।’

এবারের বাজেটে প্রভাবশালীরা কালো টাকা সঞ্চয়ের সুযোগ পাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান।

টিআইবির নির্বাহীর পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সমাজের প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজরা রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় পায়, এ কারণে তারা সাচ্ছন্দে দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে।’

ব্রিফিংয়ে জানান হয়, দুদক এবং টিআইবির যৌথ সহযোগিতার আওতায় গবেষণা কার্যক্রম, অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম, সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম রয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের অধীনে কার্যক্রম বাস্তবায়নে দুদক ও টিআইবি একজন করে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ নির্ধারণ করবে।

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) শামসুল আরেফিন এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সমঝোতা স্বারকে সই করেন।

দুর্নীতি দমন ব্যুরো অকার্যকর প্রমাণ হওয়ায় দুর্নীতি দমনে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা হয় কমিশন। ২০০৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের দুর্নীতি বিরোধী কনভেনশনে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে এটি আরও গতিশীলতা পায়। তবে ব্যুরো থেকে কমিশন হওয়ার পরও দুর্নীতি দমন কাণ্ডে কাঙ্ক্ষিত গতি আসেনি। এ জন্য আইনি জটিলতা, পর্যাপ্ত ক্ষমতার অভাব, সর্বোপরি সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠে শুরু থেকেই।

দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান তার সংস্থাটিকে নখদস্তহীন বাঘ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এরপর অবশ্য আইন সংস্কার করে সংস্থাটিকে বেশ কিছু ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এবং ইকবাল মাহমুদ সংস্থাটিতে যোগ দেয়ার পর কাজে অনেক গতি এসেছে বলেই প্রচার আছে। তারপরও মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতায় দুর্নীতি কমনে সমস্যার কথা বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।