দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে
শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যশোরের জনজীবন। গত দু’দিন ধরে কনকনে শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষসহ প্রাণিকূল। সূর্যের দেখা মিললেও ঠাণ্ডা বাতাসে হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে। এদিন এ জেলায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
যশোরসহ খুলনাঞ্চলে দু’দিন আগে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। যশোর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছিল যশোরে। এদিন যশোরে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ তাপমাত্রার সঙ্গে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় এবং বাতাসের কারণে শীত অনুভূতও হচ্ছে খুব বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, খুলনা বিভাগজুড়ে এখন হালকা থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। আরও কয়েকদিন এই অবস্থা থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এদিন যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার যশোরে এই তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বনিম্ন।
যশোরে গত তিনদিনে ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। মঙ্গলবার এই তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার ছিল সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জানা যায়, গত কয়েক বছর পর পৌষের মাঝামাঝিতে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই জানুয়ারির ৫ তারিখে এবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার ভোরও ছিল কুয়াশা ঘেরা। সকালে কুয়াশা ভেদ করে ওঠে সূর্য। ক্ষীণ আলো কুয়াশাকে ভেদ করে মাটি ছুঁয়ে নিলেও গায়ে উষ্ণতা জাগাতে পারেনি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা সরে যায়। রোদের দেখা দেয়। কিন্তু তাতে ছিলো না তেজ। ফলে মানুষজনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যহত হয়। মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে মানুষজনকে জুবুথুবু হয়ে পথ চলতে দেখা যায়। হাড় কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হননি অনেকে। খুব সকালে ক্ষেতে প্রতিদিনের মতো চাষিদের দেখা মেলেনি। বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোকে। প্রতিদিন শহরের লালদীঘির পাড়ে শ্রমিক জনগোষ্ঠীর বহর বসলেও, কাল তা ছিলো কম।
বিকেলের দিকেও শীতের প্রকোপ দেখা দেয়। রোদ পড়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় অসহ্য শীতের কাঁপুনি। রাস্তায় রিকশা, অটোরিকশা কম থাকায় অফিস থেকে ঘরে ফেরা মানুষগুলোর অনেককেই ধীর পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরতে দেখা যায়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়ে শীতের তীব্রতা।
শহরের রেলস্টেশন, বাসটার্মিনাল, অফিস-আদালতের বারান্দায় রাত কাটানো মানুষগুলো জুবুথুবু পড়ে থাকতে দেখা যায়। শীতের ‘যাঁতাকলে’ এই সব মানুষগুলো এখন তাকিয়ে আছেন সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও প্রশাসনের দিকে। প্রতিবারের মতো হয়তো সংগঠনগুলোর সহযোগিতায় তাদের গায়ে চড়বে গরম কাপড়, কম্বল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন