দেশে করোনায় যেসব বয়সী মানুষ বেশি মারা যাচ্ছেন

দেশে করোনার ভয়াল থাবায় বেড়েই চলছে প্রাণহানি। দিন দিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তারপরও অনেকেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কাও করছে না। মহামারি করোনাভাইরাসে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ইসিহাসে সর্বোচ্চ ৭৪ জন মারা গেছেন। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যু কখনো হয়নি। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫২১।

বৃহস্পতিবার করোনায় মারা যাওয়া মোট মৃত্যুর অর্ধেক মানুষের বয়সই ষাট বছরের ওপরে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে দেখা যায়, মৃত ৭৪ জনের মধ্যে ৪৬ জনেরই বয়স ষাটের ওপরে। ১৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। বাকিদের বয়স এর চেয়ে কম। ২০ বছরের নিচে কারও মৃত্যু হয়নি এদিন।

করোনায় মারা যাওয়াদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোট মৃত্যুর পরিসংখ্যানেও বয়স্করা ঝুঁকিতে রয়েছেন। ৯ হাজার ৫২১ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৩৪৯ জনই ষাটোর্ধ্ব, যা শতকরা হিসেবে ৫৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ ছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মানুষ মারা গেছেন দুই হাজার ৩৪০ জন, যা শতকরা হিসেবে ২৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষ মারা গেছেন এক হাজার ৬৫ জন, যা শতকরা হিসেবে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ।

৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষ মারা গেছেন ৪৭৩ জন, যা শতকরা হিসেবে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী মারা গেছেন ১৮৫ জন, যা শতকরা হিসেবে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী মারা গেছেন ৭০ জন, যা শতকরা হিসেবে ০ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ০ থেকে ১০ বছর বয়সী মারা গেছে ৩৯ জন যা শতকরা হিসেবে ০ দশমিক ৪১ শতাংশ।

গত এক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর আগের সব রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি, যা এক মাস আগেও ৫ শতাংশের নিচে ছিল।

এ ছাড়া যারা করোনাভাইরাসে মারা যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি। এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যুর মধ্যে ৭ হাজার ১০০ জনই পুরুষ; যা ৭৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, এদিন দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৭৪ জন মারা যাওয়ার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৮৫৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৩২।

করোনাভাইরাস নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৩৯১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৩০ জন।

এর আগে বুধবার (৭ এপ্রিল) দেশে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৬২৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া ওইদিন আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান ৬৩ জন।