দোকান চুরির অভিযোগে আটক যুবককে ইজিবাইক চুরির মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ!
রংপুরের পীরগঞ্জে দোকান চুরির অভিযোগে আটক এক অসহায় যুবককে মিথ্যা ইজিবাইক চুরির মামলার আসামী দেখিয়ে হাজতে প্রেরনের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগির পরিবারসহ এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কুমেদপুর ইউনিয়নের শরিফেরপাড়া গ্রামে। ভুক্তভোগী উক্ত গ্রামের ফাত্তা মিয়ার পুত্র স্বাধীন মিয়া (২১)।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগির পরিবার জনায়, গত ১৫ জুন’২১ইং দিবাগত রাতে শরিফেরপাড়া গ্রামের গালামাল ব্যবসায়ী মৃত রাজা মিয়ার পুত্র রোখা মিয়ার দোকানের তালা ভেঙ্গে প্রায় ২০ হাজার টাকার মালামাল চুরি যায়। এ ঘটনায় অই দোকানী গ্রামের এক তন্ত্র-মন্ত্র জানা ফকিরের নিকট চাল পড়া দিয়ে দিনমজুর স্বাধীনকে সন্দেহ করেন। সেই সাথে দোকানী রোখা মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন এলাবাসীর যথেষ্ট আপত্তি থাকা সত্বেও স্বাধীন নামের অই অসহায় যুবককে বাড়ী থেকে জোর পুর্বক তুলে এনে ইউক্লিপ্টাস গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে বেধম প্রহার করে। এক পর্যায়ে প্রহারের চোট থেকে রক্ষা পেতে স্বাধীন চুরির ঘটনা স্বীকার করে এবং একই গ্রামের আরও ২ যুবক আঃ ছামাদ মিয়ার পুত্র শরিফুল ইসলাম (২৭) ও আরিফুল ইসলাম (২৪) এর নাম উল্লেখ করেন।
প্রহারের কারণে স্বাধীনের অবস্থা বেগতিক দেখে গ্রামবাসী পীরগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্বাধীনসহ শরিফুল ও আরিফুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু দোকানী রোখা মিয়া আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ বা চুরি মামলা করতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশ শরিফুল ও আরিফুলকে থানা থেকে ছেড়ে দিলেও অজ্ঞাত কারণে দিন মজুর স্বাধীনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এ বিষয়ে উক্ত গ্রামের শিক্ষক রেজাউল করিম, নুর আলম মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, লাল মিয়া, আবু তাহের, দেলদার হোসেন, সাজু মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, স্বাধীন পেশায় একজন বেকারী শ্রমিক। সে ইতিপূর্বে কখনই কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলনা।
এদিকে গত ৩ জুন/২১ইং দিবাগত রাতে পৌরসভাস্থ প্রজাপাড়া গ্রাম হতে একটি ইজিবাইক ও দোকান চুরি ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামী দেখিয়ে জেল-হাজতে পাঠানো হয় স্বাধীনকে। যার মামলা নং ১০, তারিখ ৫ জুন/২১ইং। অথচ উক্ত মামলার বাদী হাইদুল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত স্বাধীন আমার মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী নয়, মূল আসামী হলো প্রজাপাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের পুত্র চিহ্নিত ডাকাত শাকিল মিয়া (২৪)। বর্তমান সে উক্ত মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার পুর্বক জেল হাজতে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে কুমেদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোশফাক হোসেন খান ফুয়াদ বলেন, স্বাধীন একজন সহজ-সরল দিনমজুর। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে এমন ধরণের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিয়াউল হক জানান, যেহেতু স্বাধীন গ্রামবাসীর কাছে দোকান চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে, সেহেতু তাকে তদন্তের স্বার্থে অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তদন্তে যদি সে নির্দোষ প্রমাণিত হয় তবে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন