নওগাঁর রানীশংকৈলে শুরু হয়েছে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক গৌরকই মেলা

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে শুরু হয়েছে প্রাচীন গোরক্ষনাথ-গৌরকই এর মন্দির চত্ত্বর জুড়ে প্রতিবারের মতোই এবারও শুরু হয়েছে তিন দিনের ঐতিহ্য মেলা।

উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দুরে নেকমরদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের গোরকই গ্রামে অবস্থিত এ প্রাচীন মন্দিরটি। মন্দিরটির নির্মাণ কবে হয়েছিল এবং মন্দিরটির আসল মালিকানা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা নেই কারোই।

সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের মিলনমেলা হিসেবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ মন্দিরটি দর্শনার্থীদের কাছে বেশ পরিচিত।

গতকাল রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাণীশংকৈল উপজেলা মন্দির চত্বরে ৩ দিনব্যাপি মেলার শুভ উদ্বোধন করেন ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক দীপক কুমার রায়।

মন্দির কমিটির সভাপতি কাশীনাথ দাস অধিকারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন , ভারতের সাবেক এম এল এ প্রনব কুমার নাথ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, সনাতন ধর্মলম্বীদের নেতা এ্যাডঃ অতুল চন্দ্র রায়, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ছবিকান্ত দেব প্রমুখ।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মন্দিরটি ছাড়াও এখানে রয়েছে অনাথ আশ্রম। ৩টি শিবমন্দির, ১টি কালি মন্দির। গোরক্ষনাথ মন্দির চত্বরের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। তার পিছনেই সেই আকর্ষনী কুপ। পাথরের তৈরী একটি চৌবাচ্চার মাঝে ওই কুপের অবস্থান। কুপটি বড় বড় কালো পাথরের খন্ড দ্বারা নির্মিত। কুপের একেবারে তলা পর্যন্ত ওই পাথর দিয়ে বাধাঁনো। কুপের পূর্ব দিকে একটি দরজা এবং পশ্চিম দিকে একটি দরজা। এ দুটো দরজা দিয়ে স্নানের জন্য প্রবেশ করে পুর্ণার্থীরা। এ ছাড়াও মন্দিরের দক্ষিণ পার্শ্বে দুজন পুজারীর সমাধি রয়েছে। ঠাকুর গৌরক্ষনাথের মৃত্যুর পর ওই দুজন পূজারী মন্দিরের দেখাশুনা করাকালীন তাদের মৃত্যুহলে মন্দিরের পার্শ্বেই তাদের সমাধি স্থাপন করা হয়। এ দুজন পূজারীর নামও সঠিক জানা নেই কারও।

স্থানীয়রা বলছেন রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নে একটি জনশুন্য এলাকায় প্রায় ৫’শ বছর আগে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক গৌরক্ষনাথ মন্দির। প্রতিবছরের ন্যায় শিব চতুর্দশী উপলক্ষে মন্দির কমিটির উদ্যোগে ৩ দিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে । দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সনাতন ধর্মের শত শত নারী পুরুষ মেলায় এসে মন্দিরে অবস্থিত (কথিত) অলৌকিক কুপে পূর্ণস্নান করেন। অতীতে মন্দিরটি প্রায় ২৭ একর জমি উপর অবস্থিত ছিলো। বর্তমানে ৮-৯ একর জমি মন্দিরের দখলে আছে। বাকী জমিগুলো বেদখল হয়ে গেছে। তবে মন্দিরের সম্পত্তি অনেকেই অবৈধভাবে দখল করে আত্মসাত করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। মন্দির পরিচালনা কমিটি কিংবা উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করলেও সেদিকে গুরুত্ব না দেয়ার অভিযোগ স্থানীয় সনাতন বাসিন্দাদের।

এবার মেলায় নানান রকমারি দোকানপাট নিয়ে প্রায় শতাধিক স্টল ও দোকান বসবে বলে মেলা কমিটি জানান।