নতুন বছর থেকেই চুয়াডাঙ্গায় স্থায়ীভাবে গড়ে উঠুক সুষ্ঠু সমাজ

রাত বাারো পার হলেই শুরু হবে নতুন বছর ২০২৩’র পদচারণা। পিছনদিককার বছরে সুখ দুঃখ ঝগড়াঝাটি মারামারি খুনোখুনি ছিনতাই রাহাজানি করোনার কষাঘাতসহ নানা অপরাধের মধ্যদিয়ে পার হয়ে গেল ২০২২ ইংরেজি সাল। পুরনো বছর শেষ করে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে সমাজের আনন্দপ্রিয় মানুষ মেতে উঠেছে আনন্দ উল্লাসে।

পিছনের দিনের বিভিন্ন বিবাদ বিষম্বাদ ভুলে এ দিনকে ঘিরে গানবাজনা বিভিন্ন জায়গায় পিকনিকের আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালন করা হয় ‘থার্টি ফার্স্ট’। শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গাতেও পালন করে এ দিবসটি। নতুন বছর ভালো কাটবে এমন আশা নিয়ে আনন্দ উল্লাস যেন বলে দেয় আগামী বছরের প্রতিটি দিনগুলো বোধহয় ভালোই যাবে। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে না। কয়েকদিন গেলেই আবার শুরু হয় সমাজের নানা ধরনের অপরাধ। থার্টি ফার্স্টকে কমবেশি সবাই উপভোগ করলেও বদলায় না মানুষের খারাপ চিন্তা চেতনা। সাড়া থাকে না কোন ভালো কাজে। আবার শুরু হয় পূর্বের ভালমন্দ চিত্র। তারমধ্যে খারাপ কাজের সংখ্যাই চলমান থাকে বেশি। তারই অংশ হিসেবে পিছনের ২টি বছর যেন আরও বাড়তি সমস্যার মধ্যদিয়েই পার হয়েছে দিনগুলি।

২০২০ সালের পর থেকে থেমে থেমে করোনার ছোবল খেতে খেতে ২০২২ সাল শেষ হলো ঠিকই কিন্তু জীবনযাত্রায় যত সঙ্কট ঝুটঝামেলা গত ২ বছর যেন এক ইতিহাস এবং স্মরণের বছর।

যত সুখ দুঃখ বেদনা মনের গ্লানি নিয়ে কেটেছে মানুষের জীবনের প্রত্যেকটা দিন। বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী কারো মধ্যে স্বস্তির আভাস নিয়ে চলা এখন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। ২০২১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত করোনার প্রথম ধাপ দ্বিতীয় তৃতীয় ধাপের সামাল দিতে সরকারসহ করোনা প্রতিরোধে আইনশ্ক্সৃখলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণের স্বার্থে নিজেদের জীবনের কথা না ভেবে জাতিকে সচেতনতার মধ্যদিয়ে সুরক্ষিত রেখেছিল তা অবশ্য দৃষ্টান্তমুলক। প্রয়োজনে লকডাউনের কঠিন সময়ের মধ্যে বিশেষ করে গরীব অসহায় নিন্ম মধ্যবিত্ত মানুষের বেঁচে থাকাটাও যেন মহা দুঃচিন্তার ভাঁজে নাকালে পরিণত হয়েছিল সমাজ। সরকার ওই সকল মানুষের যেভাবে চাল আটা তেল ডালসহ নগদ টাকার যে ভর্তুকি দিয়ে মানুষকে জীবনযাত্রায় সহায়তা করেছে যার সুনাম করাও দুঃসাধ্য ব্যাপার। তারপরও উন্নয়ন যেন থেমে নেই চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশ।

এদিকে, ১ম ২য় ৩য় ধাপে করোনার কষাঘাত কাটতে না কাটতেই জীবনের বারোটা বাজিয়ে বসে আসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আর সেকারণে খাদ্য ও জ্বালানি তেল, ভুট্টা, গম এবং বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যের দাম চুয়াডাঙ্গার মফস্বল জেলা হিসেবে বিশেষ করে গরীব অসহায় খেটে খাওয়াসহ নি¤œ ও মধ্যবিত্তরা গত বছর জীবন পার করেছে যেন পুলসিরাতের মত। বেশিরভাগ সরকারী কর্মকর্তাদের ঘুষ দুর্নীতি ও রাজনৈতিক বিভিন্ন নেতারা সরকারকে পুঁজি করে গিলে খেয়েছে সরকারী সম্পদ তেমীন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের সঙ্কটে অসহনীয় হারে মূল্যবৃদ্ধির কবলে চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে জাতির পিছনের দিনগুলো যেন ইতিহাস হয়ে রয়েছে।

এদিকে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়াও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বছরখানেকের মত সময় থাকলেও রাষ্ট্রীয় চেয়ার ঠিক রাখতে সারাদেশে রাজনৈতিক উত্তাপ জোরালো রয়েছে। এদিকে, দেশের এই অশুভ সময়ের মধ্যে জাতির জীবনযাত্রার মান সহজ করে তোলা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে জীবনযাত্রায় ঝুলন্ত ব্রিজের মত ঝুলছে মানুষ। যখন দেশের সার্বিক অবস্থাকে গুছিয়ে নেয়া নিতান্তই প্রয়োজন ঠিক সেসময় জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে অস্থির আবার সারাদেশ। ফলে সাধারণ মানুষের কথা ভাবার সময় যেন নেই কোন রাজনৈতিক দলেরই। এতে করে পিছনের দিনগুলো একপ্রকার ধুয়েমুছে চলে গেলেও রবিবার পহেলা জানুয়ারী শুরু হবে ২০২৩ সাল। দেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ২০২৩ সালের প্রতিটি মুহূর্ত গত বছরের চেয়ে আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বিরাজমান।

তবে জাতির স্বার্থে বর্তমান সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে কঠোর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ২০২৩ সালসহ আগামী বছরগুলোকে জীবনযাত্রার মান সহজ করাসহ দুঃশ্চিন্তা মুক্ত দেশ গড়ে তোলাই হবে জননন্দিত সরকারের পরিচয়।

সেই হিসেবে ২০২৩ সালের শুরুতেই বাজার সিণ্ডিকেটকে চিরতরে দূর করাসহ ঘুষ দুর্নীতি অনিয়ম সরকারী রাজস্ব যাতে সঠিকভাবে কোষাগারে জমা হয় সেদিকে নজর রেখে দেশ ও জাতিকে বাঁচিয়ে রাখায় হবে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। সেইসাথে নতুন বছরে শপথ নিয়ে সবাইকে সুষ্ঠুসমাজ গড়ে তোলা সমাজের মানুষের দায়িত্ব।
অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় খুন ধর্ষণ ছিনতাই ডাকাতি মাদাকসহ বিভিন্ন অপরাধ যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ প্রশাসনের কাছে আশা করে জেলাবাসী।