নতুন সেতু না খুললে উত্তরের ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তি

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ নলকায় নতুন সেতুর কাজ শেষ না হলে এবারের ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে ঈদের আগেই সেতু খুলে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে চলছে সড়ক প্রশস্তের কাজ। ঈদের আগে কাজ শেষ না হলে ঈদ যাত্রায় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক। তবে ঈদের আগেই সড়ক পুরোপুরি খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

সড়ক প্রশস্তের কাজে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় সরু হয়ে গেছে চলাচলের পথ। দুই লেনের যানবাহন চলছে এক লেনে। সংস্কার কাজ শেষ না হলে ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তির শঙ্কা চালক ও যাত্রীদের। যদিও ঈদের আগেই চলাচলের উপযোগী করার আশ্বাস দিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প কর্মকর্তারা। প্রতিদিন এই মহাসড়কে চলাচল করে ২২ জেলার অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার যানবাহন।

সিরাজগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এসআই এন্টারপ্রাইজের বাসচালক বাবলু শেখ ও হান্নান বলেন, বর্তমানে মহাসড়কের যে অবস্থা, যদি নলকা সেতু খুলে না দেওয়া হয় এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হয় তাহলে এই রোজার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

ঢাকা থেকে নওগাঁগামী ট্রাকচালক মানিক বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের নলকা সেতু নিয়ে আমরা অনেক চিন্তিত। মহাসড়কটিতে দীর্ঘ সময় ধরে উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় ঈদের আগেই থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সামনে ঈদ। এ সময় যদি নলকা সেতু এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হয়, তাহলে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হবে বলে শঙ্কায় করছি।

মীর আখতার হোসাইন লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. এখলাছ উদ্দিন বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কের যানজট ও ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা ঈদের ছুটির আগেই নলকার নতুন সেতুর এক লেন খুলে দেব। এ ছাড়া মহাসড়কের খানাখন্দগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, ঈদে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না।

সড়ক ও জনপথ (সওজ)-এর সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ঈদের আগেই দ্রুত নলকা সেতুর কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন তারা। সড়কের অসমতল জায়গাগুলোতে ইট, পাথর ও বিটুমিন দিয়ে সমতল করে মহাসড়কের সব লেন খুলে দেওয়া চেষ্টা করছেন।

সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে যানজটমুক্ত রাখতে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। যানজট নিরসনে ২০ রমজানের পর থেকে মহাসড়কে কাজ করবে ট্রাফিক পুলিশ।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতুর পাশে নির্মিত নতুন সেতুটি খুলে দেওয়ার জন্য দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। আশা করছি ঈদের আগেই নতুন সেতু দিয়ে যানবহন চলাচল করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দে রয়েছে সেগুলোও দ্রুত মেরামত করার জন্য আমরা সওজ বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েছি তারা কাজও শুরু করেছে।

লুৎফর রহমান আরও বলেন, ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে ভোগান্তি কমাতে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে এই মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করতে ৩০০ পুলিশ সদস্য চেয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুনশী শাহাবুদ্দিন বলেন, ঈদ যাত্রার মহাসড়কে ভোগান্তি কমাতে কাজ করে যাচ্ছি। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগামী ৪ দিনের মধ্যে আমরা সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত আপনাদের জানাতে পারবো।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম (বিপিএম) বলেন, ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে প্রায় ৪০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবে। মহাসড়কে মোটরসাইকেল মোবাইল টিমও থাকবে।

তিনি আরও বলেন, নলকা সেতু ও মহাসড়কের খানাখন্দের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করা হয়েছে। তারা ২০ রমজানের মধ্যে মহাসড়কের খানাখন্দ সংস্কার ও নলকায় নতুন সেতুর উত্তরের এক লেন খুলে দেওয়া হবে। -আরটিভি