নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ২ লক্ষ টাকা মাসিক চাঁদা দিয়ে ৪০টির অধিক দোকানে চোরাই তেল ক্রয়

নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় ৪০টির অধিক দোকানে ২ লক্ষ টাকা মাসিক চাঁদা দিয়ে
চোরাই তেল ক্রয় করা হয় বলে জানা গেছে। নরসিংদী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিভিন্ন কোম্পানির
ডিপো থেকে প্রতিনিয়ত লিটার জ্বালানী তেল চুরির অভিযোগ উঠেছে যেন দেখার কেউ নেই।

নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে সাজিয়ে বসে আছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা।
সুকৌশলে জ্বালানি তেল চুরি করে মহাসড়কের পাশে ছোট ছোট দোকানে এবং খোলা বাজারে বিক্রি
করা হচ্ছে।

বিভিন্ন গাড়ির ডিপোতে তেল সরবরাহকারী ট্যাঙ্ক-লরি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার তেল চুরি
করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র যা থেকে সু-কৌশলে কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তারা মাসিক মাসোহারা
নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আরো জানা যায় থানার কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের
ম্যানেজ করে ব্যাঙের ছাতার মতো বাড়ছে এসব অস্থায়ী সাময়িক তেলের দোকান।

শিবপুর উপজেলার সোনাইমুরী এলাকার ঢাকা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এক দোকান মালিক তার পরিচয়
গোপন রাখার শর্তে বলেন, প্রতি মাসে আমাদের এক একটা দোকান থেকে শিবপুর থানার কিছু অসাধু
পুলিশ কর্মকর্তাকে ২ হাজার টাকা করে মাসিক মাসোহারা দিতে হয়।

আমরা যদি এসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের টাকা না দেই তাহলে আমাদের দোকানে এসে কাস্টমারদেরকে হেনস্থা করে।
১০ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ভুক্তভোগীদের গাড়ী সহ ছাড়িয়ে আনতে হয়। এই জন্য আমরা
নিরুপায় হয়ে এবং কাস্টোমার পাওয়ার আশায় তাদেরকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে আসছি।

এদিকে খবর নিয়ে জানা যায়, দোকানিরা বাজারমূল্য থেকে কমে কিনে তা বিক্রি করে থাকেন।
এই তেলচুরি সিন্ডিকেটের সঙ্গে ডিপোতে তেল সরবরাহকারী ট্যাঙ্ক-লরির চালক, হেলপার ও খুচরা দোকানিরা
জড়িত। এমন কি কোম্পানির ডিপো সুপারের যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের
অবৈধ দোকান প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। তাছাড়া তেল চুরির ঘটনা বেড়েই চলছে। সড়কের পাশে প্রায়
প্রতিদিনই সন্ধার পর ও ভোর সকালে ডিপোতে জ্বালানি সরবরাহের আগে ও পরে ডিজেল, পেট্রোল ও
কেরোসিন বিক্রি করেন চালকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বড়ইতলা থেতে গাবতলী পর্যন্ত প্রায় ১৫
টিরও অধিক অবৈধ তেল চুরির অস্থায়ী দোকান রয়েছে। তারা প্রতিনিয়তই তেল চুরি অবৈধ উপায়ে
পুলিশ মাসোহারা দিয়ে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৃত পক্ষে
কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার জন্য পুরো ডিপার্টমেন্টের বদনাম হয়।

কিন্তু সব পুলিশ অপরাধী নয়,কিছু ন্যায় ও নিষ্ঠাবান পুলিশের কারণে এখনো ডিপার্টমেন্ট এখনো টিকে আছে।
বিভিন্ন গাড়ির ডিপোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। এসব তেল বিক্রির খুচরা দোকানের
অধিকাংশের লাইসেন্স নেই।

মূলত চুরির তেল কিনে তা বিক্রিই তাদের মূল ব্যবসা।
এ বিষয়ে রবিবার ১০:৪০ এ শিবপুর থানার ওসি মোঃ ফিরোজ তালুকদার মুঠোফোনের মাধ্যমে
সংবাদকর্মী রুদ্রকে জানান, ইতিপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও র‌্যাব একাধিক মামলা দেয়ার পরও জেল
থেকে জামিনে বের হয়ে পুনরায় দোকান খুলে বসছে। যেহেতু তারা গাড়ি থেকে তেল কিনে বিভিন্ন
জায়গায় বিক্রি করছে সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসলে আইন অনুযায়ী তাদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তেলের দোকানের বিষয়ে কোন অনৈতিক কিছু থেকে থাকে তাহলে
অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।