নরসিংদীর রায়পুরায় নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত-৩

নরসিংদীর রায়পুরার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে রায়পুরার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে এই নিহতের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- বাঁশগাড়ির বালুয়াকান্দি গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে মো.সালাউদ্দিন মিয়া (৩০), বটতলীকান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (২৬) এবং সোবহানপুর গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর (২৬)।

নিহত সালাউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রাতুল হোসেন ওরফে জাকির হোসেনের সমর্থক এবং দুলাল মিয়া নৌকার প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহষ্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এই ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল হক। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে আছেন রাতুল হোসেন জাকির। ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আশরাফুল পক্ষের সমর্থকদের গুলিতে রাতুল হোসেন পক্ষের দুইজন এবং আশরাফুল হকের আরেক জনের মৃত্যু হয়েছে।

তিনজন নিহতের ঘটনা নিশ্চিত করেন রায়পুরা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিত কুমার ঘোষ। নিহতরা হলো- বাঁশগাড়ি এলাকার হেকিম মিয়ার পুত্র মো. সালাউদ্দিন (৩০), একই এলাকার জাহাঙ্গীর (২৬) এবং দুলাল মিয়া (৫০)।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এবার বাঁশগাড়ি ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আশরাফুল হক সরকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীকের জাকির হোসেনের সঙ্গে। এটা নিয়েই বেশ কয়েক দিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

বুধবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। সারা রাত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। ভোররাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় তারা।

এদিকে, নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে সালাউদ্দিন মিয়া (৪০) নামে একজনের মরদেহ এসে পৌঁছেছে।
সালাউদ্দিনের স্ত্রী আকলিমা আক্তার বলেন, ভোরে গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার স্বামী মারা যায়।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হারুনুর রশিদ বলেন, নরসিংদী জেলা হাসপাতালে একটি মরদেহ আর নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে আরেকটি মরদেহ আছে।

রায়পুরা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিত কুমার ঘোষ বলেন, আজ (বৃহষ্পতিবার) ভোরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রথমে দুলাল মিয়া (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে বলে জেনেছি। পরে আরও দুজনসহ মোট তিনজন নিহতের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি। দুলাল মিয়ার মরদেহ মর্গে আনার প্রস্তুতি চলছে।