নরসিংদী জেলা কারাগারে তিনগুণ দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগ

কারাগারকে মূলত সংশোধনাগার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবেই বিবেচনা করা হলেও, নরসিংদী জেলা কারাগারের ভেতর নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায় নিয়মিতভাবেই। সেই সাথে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বহুগুণ বেশি কয়েদি থাকার কথাও শোনা যায়।

তেমনিই জামিনে মুক্তি পাওয়া এক আসামী মোঃ শাহীন অভিযোগ করে বলেন, শিউলী সহ প্রতিটি কক্ষে ১০০ – ১৫০ লোক থাকে। ভেতরে একটি খাবারের ক্যান্টিন রয়েছে। এই ক্যান্টিনের থেকে সকল বন্দীদের খাবার কিনতে হয়। বন্দীদের অভিযোগ, এই ক্যান্টিনে ২৫ টাকার স্পিড পানীয় কিনতে হয় ৫০ টাকা দিয়ে, ১০ টাকার আলু ভাজি ১০০ টাকা, ১০ টাকার রুটি ২০ টাকা, ৫ টাকার কলা ১৫ টাকা, ৫ টাকার সিগারেট ২০ টাকা সহ সকল পণ্যই বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩ গুণ দামে। আবার অন্যদিকে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে রাতের বেলা পাহাড়াদাররা ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। টাকা না দিলে ওয়ার্ডের পানির লাইন বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

 
অন্যদিকে নরসিংদী জেলা আদালত থেকে কোন আসামীর জামিন হলেই স্বজনরা বুক ভরা আশা নিয়ে ছুটে যায় কারাগারের মূল ফটকের সামনে। কিন্তু কারাগারে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জুবায়ের এর নেতৃত্বে বন্দীদের এসব আত্মীয়-স্বজনদের নানা অজুহাত দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। টাকা না দিলে একদিনের আসামী পরের দিন ছাড়ারও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে জেলখানায় বন্দী থাকা এক আসামীর আত্মীয় ফাতেমা বেগম সংবাদকর্মী রুদ্রকে অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাই দীর্ঘ দিন যাবৎ নরসিংদী কারাগারে বন্দী আছে। আজ মুক্তির আদেশ হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। কিন্তু তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, আমার ভাইয়ের সাথে মোবাইল ফোনে একটু কথা বলতে ৩/৪ মাসে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য কাজে তো খরচ আছেই। অথচ এই কারাগারের ভিতর বন্দীদের নিকট কোন পণ্য পাঠাতে গেলে গুনতে হয় তিন গুণ টাকা।

এই বিষয়ে আজ ২৩ শে আগষ্ট রোজ সোমবার কারাকর্তৃপক্ষের নিকট সংবাদকর্মী রুদ্র জানতে চাইলে তারা কোন কথা বলতে রাজ হয়নি। উল্টো সিকিউরিটি গার্ড আরো বলেন, এই বিষয়ে আর লেখালেখি না করলেই ভালো হয়। বাংলাদেশের সকল কারাগারেই কিছু না কিছু দুর্নীতি হয়।

শুধু তাই নয়, গোপন সূত্রে জানা যায়, এই নরসিংদী জেলা কারাগারে মাত্র ৫০০ টাকা দিলেই কোর্ট পুলিশের সহায়তা পাওয়া যায়।