নরসিংদী জেলা জুড়ে প্রস্তুতি চলছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা

নরসিংদী জেলা জুড়ে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। ঘরে ঘরে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। আর ৮ দিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নরসিংদীর মৃৎশিল্পিরা। সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা।

আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে ম-পে ম-পে বেজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসার শব্দ। পাঁচ দিনের উৎসব শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে এর সমাপ্তি হবে।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে মহালয়ার দিন থেকে দেবীর আগমনী উৎসব শুর হয়। আর এবারের মহালয়া ১৯ সেপ্টেম্বর। নরসিংদী জেলার জেলার বিভিন্ন পূজা ম-প ঘুরে দেখা যায়, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পিরা। নরসিংদী শহরের সবচেয়ে বড় পূজা মন্দির সেবা সংঘ দুর্গা মন্দিরের গিয়ে দেখা যায়, মাটির কাঠামো নির্মাণের মূল কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করেছেন শিল্পীরা।

এখন বাকি রং-তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমার রূপ-যৌবনা ফিরিয়ে আনার মূল কাজ। তবে মৃৎশিল্পিরা জানান, বৃষ্টি এবং মেঘলা আবহাওয়ার জন্য প্রতিমা শুকাতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা। তারা বলেন, গেল কয়েকদিন টানা বৃষ্টির ফলে প্রতিমাগুলো শুকানো যাচ্ছে না। আবহাওয়ার উন্নতি না হলে তা আমাদের জন্য অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।

নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর সূর্যকান্ত দাস বলেন, নরসিংদী জেলায় এ বছর ৩২৪টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নরসিংদী শহরে ৩১টি ও মধাবদী পৌর এলাকায় ১৪টি পূজা ম-পসহ নরসিংদী সদরে মোট ৯৭টি, পলাশে ৩৭টি, শিবপুরে ৬৮টি, রায়পুরায় ৬১টি, মনোহরদীতে ৪৩টি ও বেলাবতে ১৮টিপূজা ম-প।  তিনি বলেন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সকল ম-পে সর্বাধিক সহযোগিতা করা হবে।

নরসিংদী পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের সব থেকে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা। এই দুর্গাপূজায় যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা-পুলিশের পাশাপাশি আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।

তিনি আরো বলেন, ‘সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ বাহিনী তৎপর। আমি আশাকরি, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।’

এদিকে নরসিংদী পৌরসভার পক্ষ থেকে সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন স্থানে সি সি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পাঁচ দিনের উৎসব শেষে শান্তিপূর্ণ ভাবে দশমী করার জন্য নরসিংদী শহরের সকল পূজা ম-পের প্রতিমাগুলোকে নিদ্দিষ্ট স্থানে জড়ো করে একে একে বিসজ্জন করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এব্যাপারে নরসিংদী পৌর মেয়র আলহাজ্ব কামরজ্জামান কামরল জানান, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজাকে সার্বজনিন করতে নরসিংদী পৌরসভার পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিজয়া দশমীর দিন পৌরসভার সামনে দশমী মঞ্চ তৈরী করা হবে। এই মঞ্চ থেকে বিভিন্ন ম-পের প্রতিমাগুলোকে একে একে দশমী ঘাটে নিয়ে বিসজ্জন দেয়া হবে।