নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভা

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) ঐতিহাসিক ২৫ মার্চ জাতীয় ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেসরকারী পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার পথপ্রদর্শক এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মাঝে র‌্যাংকিং এ প্রথম স্থান অর্জনকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ঐতিহাসিক ২৫ মার্চ জাতীয় ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় বক্তারা বলেন, ঐতিহাসিক ২৫শে মার্চ। মহান মুক্তিযুদ্ধের শোকস্মৃতিবাহী গণহত্যা আর নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞের ‘কালরাত’। জাতীয় ‘গণহত্যা দিবস’। জাতি গভীর বেদনায় প্রতিবছর স্মরণ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাপুরুষোচিত হামলার শিকার নিরীহ শহীদ আর প্রতিরোধসংগ্রামে আত্মদানকারী বীর যোদ্ধাদের।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ অফিসের পরিচালক জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই এর প্রাক্তন সভাপতি এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম. এ. কাসেম।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগ এর ভিজিটিং প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম।

স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেণ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইসমাইল হোসেন।

ঐতিহাসিক ২৫ মার্চ উপলক্ষে এনএসইউ নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এর মধ্যে আলোচনা সভা, দোয়া-মাহফিল, মোমবাতি প্রজ্বলন এবং প্রতীকী ক্যাম্পাস ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন উল্লেখযোগ্য।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম. এ. কাসেম বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ একটি বীভৎস রাত। এ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর গুলি চালায়, নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। তাদের এ গণহত্যা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল যাতে এদেশের মানুষ ভয় পায় এবং তারা কোন প্রতিবাদ করার সাহস না পায়। তাদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং সে ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের সর্বস্তরের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং ৩০ লক্ষ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করে। একমাত্র বঙ্গবন্ধু ছিল বলেই আমরা স্বাধীনতা লাভ করতে পেরেছিলাম।’

অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ এর সেই কালরাত ছিল একটি জাতিকে চিরতরে শেষ করে দেওয়ার এক ষড়যন্ত্রের ইতিহাস। দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের স্বাধীনতার স্বপ্ন কে চিরতরে নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য সেদিন নির্বিচারে এদেশের ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই আমরা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি লাভ করে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে আসতে পেরেছি। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কারণেই আমাদের এই মুক্তি লাভ সম্ভব হয়েছিল।’

প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি জাতিকে সমূলে উচ্ছেদ করার জন্য যে দীর্ঘ পরিকল্পনা তার বাস্তবায়নের উদ্যোগে ছিল ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাত। একটি স্বাধীনতা প্রিয় জাতির স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার জন্যই সেরাতে নিরীহ মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশের আপামর জনগণ স্বাধীনতার জন্য ঝাপিয়ে পড়ে এদেশ স্বাধীন করে। আজ আমরা স্বাধীন কিন্তু আমাদের দেশের প্রতি আমাদের অনেক কর্তব্য রয়েছে, আমাদের সবার যার যার জায়গা থেকে আমাদের করণীয় কাজ গুলি সঠিক ভাবে সম্পাদন করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব বিজনেস এন্ড ইকোনোমিক্স এর ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস এর ডিন অধ্যাপক ড. জাবেদ বারী, স্কুল অব হিউম্যানিটিস এন্ড সোস্যাল সায়েন্সেস এর ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুর রব খান, স্কুল অব হেলথ এন্ড লাইফ সায়েন্সেস এর ভারপ্রাপ্ত ডিন, অধ্যাপক ড. হাসান মাহমুদ রেজা, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এর স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামীসহ শিক্ষকবৃন্দ এবং কর্মকর্তাবৃন্দ।