নিজের সংসারে অভাব! তবু গরীব মানুষকে ১ টাকায় তিনবেলা খাওয়ান এই ব্যবসায়ী
উচ্চমাধ্যমিক পাস করেই আর লেখাপড়ার বিশেষ সুযোগ পাননি ৷ কারণ সংসারে অভাব ৷ তাই খুব অল্প বয়সেই পড়ালেখার পাট চুকিয়ে খুলেছিলেন একটি খাবার দোকান ৷ তারপর নিজের সংসার বেড়েছে , বেড়েছে দায়িত্বও। ছোট খাবারের দোকান আজ পরিণত হয়েছে রেস্তোরাঁয়৷ তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ভেঙ্কাটারামন ৷ দিনের পর দিন গরীবের মুখে খাবার তুলে দিয়ে যেন ভগবান হয়ে উঠেছেন তিনি।
নিজে অভাবের সংসারকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে ৷ তাই তাঁর লক্ষ্য ছিল যেন কেউ অভাবের তাড়নায় ক্ষুধার্ত না থাকে ৷ তাই তিনি মাত্র ১টাকার বিনিময়ে দরিদ্র মানুষের মুখে খাবার তুলে দিয়ে আসছেন গত ৮ বছর ধরে ৷
শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন যে, কি করে এটা সম্ভব ? মাত্র ১টাকার বিনিময়ে একটি কুপন দিতেন তিনি, আর তাতেই তিন বেলা মিলত খাবার। সম্বর, ধোসা , ইডলি , চাল নিয়ম করে বিলি করে চলছেন এই ব্যবসায়ী মাত্র ১টাকার বিনিময়ে ৷ কাজটা কঠিন হলেও ভেঙ্কাটারামনের কাছে এটা ছিল একটা চ্যালেঞ্জ।
বর্তমানে ৭০ টি টোকেন বিলি করে থাকেন তিনি ৷ চেন্নাই থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে তামিলনাড়ুর একটি ছোট জায়গা, যেখানে মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটিয়ে থাকে ৷
তামিলনাড়ুর ইরড জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন তাঁর এই রেস্তোরাঁ। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী সহ তাদের পরিবারের লোকেরা গরীব হওয়ায় ভালো করে খেতে পেতেন না অনেকেই ৷তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে মাত্র ১টাকার বিনিময়ে খাবার কুপন দেওয়া হবে ৷ যার ফলে দরিদ্র মানুষরা মুখরোচক খাবার খুব সহজেই সংগ্রহ করতে পারবেন ৷
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ১টাকার বিনিময়ে তিনি কি করে এই খাদ্য তালিকা তিনি বিলি করে থাকেন ? উত্তরে ভেঙ্কাটারামন জানান যে, তাঁর নিজেরই অভাবের সংসার ৷
তাঁর স্ত্রী একটি যোগা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের দুটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান নিয়ে সংসার ৷ তবে তাঁদের মধ্যে এক কন্যার ইতিমধ্যেই বিবাহ দিয়েছেন ভেঙ্কাটারামন ৷ তাঁর ছেলে বর্তমানে ভারতীয় রেল কর্মচারী ৷ বেশ কিছুদিন আগেই ভেঙ্কাটারামণের ছোট মেয়ে কলেজে ভর্তির সময় অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে পড়েন তিনি ৷
বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য চাওয়ার পরও যখন তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন , তখন তাঁর এই নিঃস্বার্থ কাজের কথা জানার পর, শহরের রামকৃষ্ণ মঠ এগিয়ে আসে ও তাঁর মেয়ের ভর্তির জন্য সব খরচের দায় ভার নেন তাঁরা ৷
তাঁর ব্যবসাতে কম লাভ হওয়া সত্ত্বেও তিনি এই অভাবের সংসারেও দরিদ্র মানুষদের পাশে থাকতে পেরে খুবই খুশি ৷ শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে ৭০টি টোকেন কে ১০০টি টোকেনে পরিণত করার চিন্তা ভাবনাও করছেন ভেঙ্কাটারামন।-কলকাতা২৪
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন