সুন্দরবন সুরক্ষায় চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধি পেল : টিআইবি

বাংলাদেশের সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তিকরণের সম্ভাবনা থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি। পোলান্ডের ক্রাকো শহরে চলমান ৪১তম অধিবেশনে এই অব্যাহতি দেয়া হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, এই অব্যাহতি আপাত স্বস্তিদায়ক। সাময়িক স্বস্তিমূলক অব্যাহতি পাওয়ার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের কূটনৈতিক তৎপরতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে ইউনেস্কোর সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য সূত্রে জানা যায়।

একইসঙ্গে, এই সাময়িক স্বস্তি রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারত সরকারের উপর সুন্দরবনের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য সুরক্ষা নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জ ও দায় বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে বলে মনে করছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির পরবর্তী ৪২তম সভার মধ্যে সুনির্দিষ্ট শর্ত পূরণে অর্পিত শর্তাবলি পালনে ব্যর্থ হলে সুন্দরবনকে পুনরায় ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার ঝুঁকি থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তিনি।

শক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির এই অবস্থানের কথা জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারত কর্তৃপক্ষের কতিপয় সাম্প্রতিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে সেই সঙ্গে টিআইবি আরও লক্ষ করছে যে, কমিটি বাংলাদেশ ও ভারতকে ২০১৬ সালের মার্চের বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার) মিশন প্রসূত প্রতিটি সুপারিশসহ কতিপয় সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ সুপারিশ অত্যন্ত জোরালোভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।

উল্লিখিত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কমিটির ৪১তম সভার প্রতিবেদনের ৫৫ থেকে ৫৮ পৃষ্ঠার তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবন ও এর আশপাশে বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপর ‘কৌশলগত পরিবেশ প্রভাব সমীক্ষা’ সম্পন্ন করতে হবে। তার আগে ওই এলাকায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সর্ব প্রকার শিল্প কারখানার কার্যক্রম স্থগিত করতে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি আহ্বান জানিয়েছে। একইভাবে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া পশুর নদের খননের আগে তার পরিবেশগত প্রভাব ও পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। এটিসহ ২০১৬ সালের মার্চের মিশন উপস্থাপিত সুপারিশসমূহ কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার প্রতিবেদন ২০১৮ এর ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইউনেস্কোর নিকট দিতে হবে।

এছাড়া সুন্দরবন সুরক্ষায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতার অধিকতর সম্প্রসারণের অপরিহার্যতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইউনেস্কোর ২০১৬-এর মার্চ মিশনের সব সুপারিশ জরুরিভিত্তিতে পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে এই কমিটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে আইইউসিএন’র বিশ্ব ঐতিহ্য পরামর্শমালা অনুসরণ করা ও রামপাল প্রকল্পের বর্তমান অবস্থানে সব সম্প্রসারণ কার্যক্রম বন্ধ করার সুপারিশ করেছে। বিষয়টির প্রতি টিআইবি রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।