কারাগারে যেভাবে ৬ মাস কাটলো খালেদা জিয়ার

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দণ্ড নিয়ে কারাগারে ৬ মাস পার করলেন। এর মধ্যে মাঝে মাঝে তার সঙ্গে দেখা করেছেন তার আত্মীয়, আইনজীবীরা ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। নেতারা দেখা করে সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা বলেছেন তিনি গুরুতর অসুস্থ নয়। একজন মহিলা পরিচালিকা দিয়ে কাটছে তার দিন।

খালেদা জিয়া সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়েন তিনি। ইবাদত-বন্দেগি ও বই পড়ে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজন ও দলের নেতারা। কারাগারে তার চিকিৎসাসেবার জন্য একজন চিকিৎসকও রাখা হয়েছে।

কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূলফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার, দুটি ফ্যান রয়েছে। দেয়া হয়েছে টেলিভিশন, তবে সেখানে দেখানো হবে শুধু বিটিভি। পাশের রুমে গ্যাসের চুলায় রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে।

তিনি বলেন, তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমা। ভিআইপি বন্দি ও জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। সকালে তাকে তিনটি জাতীয় দেনিক পড়তে দেয়া হচ্ছে।

খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে দায়ের করা ৩৬টি মামলার মধ্যে তিনটির জামিন এখনো বাকি। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তার জামিন না পাওয়ার আশঙ্কার কথাও বলছেন নেতাকর্মীরা। শীর্ষ নেতারা জানান, নির্জন কারাগারে ভালো নেই বেগম জিয়া। নানা রোগে ভুগছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে নেওয়া হয়। একটি মামলায় তাকে ৫ বছরের কারাদ- দেন আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারে বন্দি আছেন। মুক্তির দাবিতে তার দল বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

খালেদা জিয়ার মামলার সর্বশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ৩৬টি মামলার মধ্যে ৩৩টিতে জামিনে আছেন খালেদা জিয়া। কুমিল্লা, নড়াইল ও ঢাকার তিনটি মামলার জামিন বাকি আছে। এ তিনটি মামলায় জামিন হলে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মামলায় ১২ মার্চ হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিন দিলেও অন্য সব মামলায় তিনি জামিন পাননি।